মিয়ানমার সফরে বান কি মুন

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন
ফাইল ছবি

রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জর্জরিত মিয়ানমার সফরে গেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন। তবে তাঁর সফর সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানায়।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে জান্তা সরকার। এর ফলে সৃষ্ট সংকটের অবসানের লক্ষ্যে যেসব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে, তা স্থবির হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে ভিন্নমতের ওপর নৃশংস দমন-পীড়নের কারণে আন্তর্জাতিক সমালোচনাও জান্তা সরকার উপেক্ষা করে চলেছ। এ ছাড়া বিরোধীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে জান্তা সরকার।

বান কি মুন আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার প্রতিষ্ঠিত বিশ্বনেতাদের ‘দ্য এল্ডারস’ গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপ শান্তি প্রচার ও সংঘাত নিরসনে কাজ করে।

মিয়ানমারে রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোব নিউ লাইন পত্রিকার খবরে বলা হয়, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বান কি মুন ও তাঁর দল উড়োজাহাজে করে নেপিডোতে পৌঁছান।

পত্রিকাটি জানায়, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রীরা তাঁর (বান কি মুন) সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করেনি।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বুলেটিনে দেখানো হয়, বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ক্যামেরার দিকে লক্ষ্য করে বান কি মুন হাত নাড়েন। এ সময় তাঁর সঙ্গে অনেক কর্মকর্তা ছিলেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব থাকাকালে বান কি মুন বেশ কয়েকবার মিয়ানমার সফর করেছেন। সেই সয়মগুলোতে জেনারেলদের সঙ্গে তাঁর আলোচনা সফলও হয়েছিল।

২০০৯ সালে তিনি মিয়ানমারে এসেছিলেন অং সান সু চির মুক্তির বিষয়ে। ওই সময় তিনি তৎকালীন জান্তা প্রধান থান সুয়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। কিন্তু জেনারেল তাঁকে (বান কি মুন) সু চির সঙ্গে দেখা করতে দেননি।

২০১৬ সালে সু চি কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং মিয়ানমারের কার্যত (ডি ফ্যাক্টো) বেসামরিক শাসক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সুচিকে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্যমতের কথা জানান দিতে তিনি ২০১৬ সালে আবার মিয়ানমার সফরে যান।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সু চি আবার গ্রেপ্তার হন। এতে মিয়ানমার আবার টালমাটাল হয়ে ওঠে এবং অর্থনীতির পতন ঘটে।

মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত নোলিন হেইজার গত বছরের আগস্টে দেশটিতে সফরের সময় সু চির সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়নি। এরপর তিনি জানান, যত দিন না তাঁকে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে, তত দিন তিনি আর মিয়ানমার সফর করবেন না।

গত ডিসেম্বরে বেশ কয়েকবার রুদ্ধদার আদালতে সু চির বিচার হয়। সেখানে তাঁকে মোট ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।