এক হাঁটু গেড়ে প্রেমিকা রিয়া শুক্লাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন যশরাজ ছাবড়া। গত ১৮ আগস্ট নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিমানবন্দরে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

বিমানবন্দরে প্রবেশ করেই এমন অভিবাদন পাবেন, সেটা বোধ হয় ভাবেননি ভারতীয় তরুণী রিয়া শুক্লা। বিমানবন্দরে ঢুকতেই মাইকে রিয়ার কানে ভেসে আসে তাঁর প্রেমিকের কণ্ঠস্বর। এখানেই শেষ নয়। কিছুক্ষণ পর শুনতে পান, প্রেমিক যশরাজ ছাবড়া তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন।

অভিনব কায়দায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রেমিকাকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন যশরাজ। এ জন্য বিমানবন্দরের কর্তা–ব্যক্তিদের রাজিও করান। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিয়া বিমানবন্দরে ঢুকতেই মাইকে কথা বলতে শুরু করেন তিনি। এই সময় প্ল্যাকার্ড হাতে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা।

রিয়া শুক্লার জন্ম অকল্যান্ডে। কিন্তু চাকরিসূত্রে থাকেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে। গত ১৮ আগস্ট মেলবোর্ন থেকে অকল্যান্ডে আসেন রিয়া। কিন্তু বিমানবন্দরে ঢুকতেই একের পর চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে থাকে তাঁর সঙ্গে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর বাগ্‌দান সম্পন্ন হয়।

যশরাজ ছাবড়া কিছুদিন ধরে ভাবছিলেন প্রেমিকা রিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেবেন। তিনি চাচ্ছিলেন রিয়াকে চমকে দেবেন। এ জন্য বিমানবন্দরকে মোক্ষম স্থান মনে করেন তিনি। তবে বিমানবন্দরে এ ‘কাণ্ড’ করার জন্য বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। তবে শেষ পর্যন্ত অনুমতি মেলে কর্তৃপক্ষের।

যশরাজ জানান, তিনি এমন কিছু করতে চাচ্ছিলেন, যা তাঁর প্রেমিকা রিয়া আজীবন মনে রাখবে। তিনি বলেন, ‘তার মতো একজনকে (রিয়া) চমকে দেওয়া খুবই দুরূহ একটি কাজ। কারণ, সে খুবই শক্ত মনের একজন মানুষ। কিন্তু আমি এমন কিছু করতে চাচ্ছিলাম যেন সে অবশ্যই চমকে যায়।’

পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন যশরাজ। রিয়া বিমানবন্দরে ঢোকার পরই বিমানবন্দরে যাত্রীদের উদ্দেশে যেখান থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, সেই বক্স থেকে ভেসে আসতে থাকে ধারণ করে রাখা যশরাজের কণ্ঠস্বর। রিয়াকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করে নানান কথা বলেন তিনি।

বিমানবন্দরের চারপাশ থেকে প্রেমিকের এসব কথা শুনেই চমকে যান রিয়া। কিছু দূর এগোতেই দেখেন এগিয়ে আসছেন যশরাজ। তাঁর সামনে এসেই যশরাজ এক হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন। একটি আংটি বের করে রিয়াকে সেটি পরিয়ে দিতে চান। রিয়াও প্রেমিকের দিকে হাত বাড়ান। এ সময় এই যুগলের পেছনে ‘তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর স্বজনেরা।

সিএনএনকে পরে রিয়া বলেন, ‘আমি তো এসব দেখে হতবাক হয়েছিলাম। কয়েক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল, এখানে বোধ হয় শুধু আমরা দুজনই আছি। পরে দেখি, আমাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরাও এসেছে। তারা আমাকে জড়িয়ে ধরল। সেদিনের সেই মুহূর্তটি ছিল সত্যিই জাদুকরী।’

সেই সময়ে বিমানবন্দরে থাকা অন্য যাত্রীরাও থমকে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য অবলোকন করেন। পুরো ঘটনাটি পেশাদার ব্যক্তিদের দিয়ে ক্যামেরায় ধারণ করা হয়। পরে সেটি বিমানবন্দরে বিভিন্ন পর্দায় দেখানো হয়। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।