নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্ট

নেপালের বরখাস্ত উপপ্রধানমন্ত্রী রবি লামিচানে
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

নেপালের নতুন সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী রবি লামিচানে। একই সঙ্গে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। ৪৮ বছর বয়সে দেশটির সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তিনি। নাগরিকত্ব আইন ভঙ্গ করায় গতকাল শুক্রবার তাঁকে এসব দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নেপালের সর্বোচ্চ আদালত। খবর আল–জাজিরার।

সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে আল–জাজিরা বলেছে, দ্বৈত নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত ঝামেলায় জড়িয়ে পদ খুইয়েছেন রবি লামিচানে। গত ২৬ ডিসেম্বর নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। এর ঠিক মাসখানেকের মাথায় তাঁর বিরুদ্ধে এমন রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

রবি লামিচানে নেপালের একসময়ের জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত একটি সরাসরি অনুষ্ঠান টানা ৬২ ঘণ্টা উপস্থাপনা করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছিল তাঁর। পরে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান রবি। সেখানে বসবাস করতেন। পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে নিজের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

রবি লামিচানে নেপালের রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। গত বছরের জুনে রাজনৈতিক এই দল গঠন করা হয়। এবারের নির্বাচনে দলটি ১৯টি আসনে জয় পেয়েছে। গত ডিসেম্বরে যখন রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে নেপালে জোট সরকার গঠন করা হয়, তাতে যোগ দেয় দলটি। নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন দেশটির বর্ষীয়ান রাজনীতিক পুষ্পকমল দহল। উপপ্রধানমন্ত্রী পদে বসেন রবি লামিচানে।

আরও পড়ুন

একসময় রবি দেশ ছেড়ে স্থায়ী বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন; যদিও ২০১৮ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়েছেন। পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে, সফলও হয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বলেছেন, অন্য দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে রবি যথাযথ প্রক্রিয়া মানেননি। দেশে ফেরার পর তিনি নেপালের নাগরিকত্বের জন্য পুনরায় আবেদন করেননি। তাই তাঁর নেপালি নাগরিকত্বের বৈধতা নেই। নেপাল দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে না। এ পরিস্থিতিতে তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়া, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে বসা বৈধ হয়নি।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে নেপালের সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র বিমল পৌদেল বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্য পদে রবি লামিচানের প্রার্থিতা ও নির্বাচনের ফল বাতিল করে রায় দিয়েছেন। এর ফলে তাঁর আসন শূন্য হয়ে যাবে।’

রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় রবি লামিচানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের রায় অনুযায়ী আমি এখন কোনো নাগরিকত্ব ছাড়াই আছি। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’ এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এ রায়ের বিষয়ে নেপালের সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

আরও পড়ুন