মিজোরামে ঢুকে পড়েছে মিয়ানমারের ৫ হাজার নাগরিক, ৪৩ সেনার আত্মসমর্পণ

ভারতের মিজোরামের সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমারের ভেতরে জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপ চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ক্যাম্প। ছবিটি ১৩ মার্চ ২০২১ সালের
ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের চিন রাজ্যে গতকাল সোমবার সেনাবাহিনী ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকা ভারতের মিজোরামে পাঁচ হাজারের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক ঢুকে পড়েছে।

মিজোরাম পুলিশের ইন্সপেকটর জেনারেল লালবিকথাঙ্গা খিয়াংতে দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা লোকজন সীমান্তবর্তী মিজোরামে দুটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২০ জন আহত। এর মধ্যে আটজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আইজলে ও অন্যদের চাম্পাইয়ে নেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারের ৪৩ সেনার মিজুরামে আত্মসমর্পণ

এদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অন্তত ৪৩ সেনা ভারতের মিজুরাম রাজ্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ের এক দিন পর এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ কর্মকর্তা লালমালসওমা হ্নমতে রয়টার্সকে বলেন, ‘তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে কি হবে না, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি।’

সিত্তওয়ে শহরে কারফিউ জারি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সরকারি নথিপত্র ও গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানা যায়। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় যখন সামরিক ও ক্ষুদ্র জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই চলছে, তখন এই খবর এল।

১৩ নভেম্বর স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের জারি করা এক নোটিশে সিত্তওয়ে শহরের বাসিন্দাদের রাত নয়টার পর বাড়ির বাইরে না যেতে এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রাত সাড়ে আটটার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম নারিনজারা নিউজ ও ওয়েস্টার্ন নিউজ কারফিউ জারি হয়েছে বলে তাদের খবরে প্রকাশ করেছে।

তবে এ বিষয়ে মিয়ানমার জান্তার মুখপাত্র কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে রাখাইন রাজ্যের এক বাসিন্দা ও বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াইরত আরাকান আর্মির (এএ) এক মুখপাত্রের ভাষ্য, রাখাইন রাজ্যজুড়ে লড়াই চলছে।

সংগঠনটি রাথেডাং ও মিনবিয়া শহরে থাকা সামরিক চৌকিগুলো দখল করে নিয়েছে।
রাথেডাংয়ের এক বাসিন্দা রয়টার্সকে আজ মঙ্গলবার বলেন, গতকাল রাতভর এই এলাকায় গোলাবর্ষণ হয়েছে। সেনাসদস্যরা শহরটিতে ঢুকে পড়েছেন। লোকজন শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন। এখন শহরে শুধু সেনাসদস্যরা আছেন।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিয়ানমারের জান্তা এখন বেশ কঠিন সময় পার করছে। সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এক হয়ে হামলা চালিয়ে কিছু শহর ও সামরিক পোস্ট দখল করে নিয়েছে।

জান্তাবিরোধী সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠী গত ২৭ অক্টোবর চীনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী শান রাজ্যে হামলা চালিয়ে কয়েকটি শহর ও শতাধিক সামরিক চৌকি দখল করে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে এই রাজ্যে কারফিউ জারি করে জান্তা। চলতি সপ্তাহে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন ও চিন রাজ্যে নতুন করে লড়াই হয়েছে।