মালয়েশিয়ায় বন্যায় ৫ জনের প্রাণহানি, স্থানান্তরিত ৭০ হাজার

বন্যাকবলিত মানুষদের নৌকা দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। তেরেঙ্গানু, মালয়েশিয়া, ২১ ডিসেম্বর
ছবি: এএফপি

মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলে বন্যায় তিন বোনসহ অন্তত পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটেছে। সেখান থেকে ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দেশটির কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।

মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা বর্ষাকালীন বন্যায় কেলান্তান রাজ্যে ৩১ হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ফেলে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছে। আর প্রতিবেশী  তেরেঙ্গানু রাজ্যে ৩৯ হাজারের বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কেলেন্তানের কুয়ালা করাই জেলার বাসিন্দা মুহাম্মদ আমিনুদ্দিন বাদরুল হিসাম বলেন, স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে নদীর পানির উচ্চতা প্রায় ১০ ফুটে পৌঁছেছে। এ জন্য তারা ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বন্যায় গত সোমবার কেলেন্তানে চারজন মারা যায়। এর মধ্যে তিনজনই বোন। তারা বন্যার পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হারায়। অপরজন দেড় বছর বয়সী শিশু, পানিতে ডুবে মারা যায়। আর তেরেঙ্গানু রাজ্যে মারা যায় দুই বছর বয়সী এক শিশু। গত রোববার সে বন্যার স্রোতে ভেসে যায়।

নৌকায় করে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বন্যাকবলিত মানুষদের। তেরেঙ্গানু, মালয়েশিয়া, ২১ ডিসেম্বর
ছবি: এএফপি

প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত কিছু এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ও উদ্ধার তৎপরতা চালাতে অতিরিক্ত তহবিল দিতে যাচ্ছে। আনোয়ার ইব্রাহিম গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তাঁর সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার জন্য ৯ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে।  

বন্যার কারণে পাহাং, জোহর ও পেরাক রাজ্যে থেকেও লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবল বন্যাকবলিত এলাকায় তাঁরা আকাশ থেকে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় প্রতিবছরই বন্যার ঘটনা ঘটে থাকে। সেখানে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। গত বছর এ সময় দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার ঘটনা ঘটে। এতে ৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।