মালদ্বীপে ভারতের কোনো সেনা চান না নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু
মালদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু দেশটিতে অবস্থানরত ভারতীয় সেনাদের ফেরত পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই তিনি কাজ শুরু করে দেবেন।
গত মাসে মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন মোহামেদ মুইজ্জু। নভেম্বরের শেষের দিকে শপথ নেবেন তিনি।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুইজ্জু বলেন, ‘মালদ্বীপের মাটিতে আমরা কোনো বিদেশি সামরিক তৎপরতা চাই না। আমি এ নিয়ে মালদ্বীপের জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমি আমি আমার প্রতিশ্রুতি পূরণ করা শুরু করব।’
মুইজ্জুর দাবি, তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার কয়েক দিন পর ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। তখন তিনি খুব স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, প্রত্যেক ভারতীয় সেনাকে সরিয়ে নিতে হবে।
মালদ্বীপ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের প্রভাব বলয়ের মধ্যে আছে। মুইজ্জুর পদক্ষেপের কারণে মালে ও দিল্লির মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মালদ্বীপকে ২০১০ ও ২০১৩ সালে দুটি হেলিকপ্টার এবং ২০২০ সালে একটি ছোট উড়োজাহাজ উপহার হিসেবে দিয়েছিল দিল্লি। এগুলোকে কেন্দ্র করেই মূলত মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় বাহিনীকে বের করে দেওয়ার দাবি ওঠে।
দিল্লি বলেছিল, উড়োজাহাজগুলো অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা এবং আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে। তবে ২০২১ সালে মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতীয় উড়োজাহাজগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারতের সেনাবাহিনীর প্রায় ৭৫ জন সদস্যকে মালদ্বীপে মোতায়েন করা হচ্ছে। এতে মালদ্বীপের জনগণের মধ্যে সন্দেহ আর ক্ষোভ তৈরি হয়। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন, উড়োজাহাজ পরিচালনার অজুহাতে আসলে মালদ্বীপের ভূখণ্ডে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে ভারত।
মুইজ্জুর আশঙ্কা, বিশেষ করে হিমালয়ান সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এসব সেনার উপস্থিতি মালদ্বীপকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তিনি বলেন, ‘এই বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে মালদ্বীপ খুবই ছোট রাষ্ট্র। আমরা এতে জড়াব না।’
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিবিসিকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সলিহ বলেছিলেন, ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতিজনিত শঙ্কার বিষয়টি নিয়ে অতিরঞ্জন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মালদ্বীপে নিযুক্ত বিদেশি সেনাদের কেউ সামরিকভাবে সক্রিয় নন। যে ভারতীয় সেনারা এখন দেশে অবস্থান করছেন, তাঁরা মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের অধীন কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তবে মুইজ্জু বলছেন, এটা শুধু উড়োজাহাজের বিষয় নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালদ্বীপ ভারতের সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তিগুলো করেছে, সেগুলোও তিনি খতিয়ে দেখতে চান।