দক্ষিণ কোরিয়ায় বন্যায় আটজনের মৃত্যু

আরও কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি চলতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে
ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় কমপক্ষে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

সিউলে গত সোমবার রাতে ভারী বৃষ্টির পর শহরের রাস্তাঘাট, বিভিন্ন মেট্রো স্টেশন পানিতে ডুবে গেছে। শহরটি এবং আশপাশের প্রদেশগুলো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া সংস্থা বলছে, সিউলের কিছু কিছু এলাকায় ৮০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। আরও কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি চলতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।

সিউলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, ট্রেনের সিঁড়ি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পার্কিংয়ে রাখা গাড়িগুলোর জানালা পর্যন্ত বন্যার পানি উঠে গেছে। সড়কে হাঁটুসমান পানি ডিঙিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বানজিহা নামের একটি সেমি-বেসমেন্ট অ্যাপার্টমেন্টের তিন বাসিন্দা মারা গেছেন। তাঁরা বন্যার পানিতে আটকে পড়েছিলেন। উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা বলছেন, রাস্তায় কোমরসমান পানি জমে যাওয়ায় ওই ভবনে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। নিহত তিনজনের মধ্যে দুই বোন এবং তাঁদের এক মেয়ে রয়েছে। দুই বোনের বয়স ৪০–এর কোটায়। আর মেয়ের বয়স ১৩ বছর। বাড়িটির চারপাশে এখনো বন্যার পানি জমে আছে। উল্লেখ্য, বন্যায় এ ধরনের আন্ডারগ্রাউন্ড ফ্ল্যাটের ঝুঁকি তুলে ধরে নির্মিত হয়েছিল ‘প্যারাসাইট’ মুভি। ২০২০ সালে চলচ্চিত্রটি অস্কার পুরস্কার জিতে নিয়েছিল।

নিহত তিনজন যে ফ্ল্যাটে ছিলেন তার ঠিক ওপরের ফ্ল্যাটেই থাকেন সুন উ। বিবিসিকে তিনি বলেন, রাত আটটায় বাড়িতে ফিরে দেখেন এটি বন্যার পানিতে ডুবে আছে।

সুন উ বলেন, ‘আমি যদি আগে বাড়ি ফিরতে পারতাম তাহলে হয়তো তাঁদের বাঁচাতে পারতাম। আমার খুব আফসোস হচ্ছে এখন।’ তাঁর তথ্যমতে, নিহত ব্যক্তিরা ১০ বছর ধরে ওই অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করছিলেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ তিনজনসহ গিয়োনগি প্রদেশে বন্যায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। এর মধ্যে চারজন্যই বন্যার পানিতে ফ্ল্যাট ডুবে যাওয়ার কারণে মারা গেছেন। একজন মারা গেছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।

বাস স্টপের ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে উদ্ধার হয়েছে আরও একজনের মৃতদেহ। আর ভূমিধসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুজন। ইতিমধ্যে সিউলের দংজাক এলাকায় ঘণ্টায় ১৪১ দশমিক ৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ (কেএমএ) বলছে ১৯৪২ সালের পর এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টি।