কোরিয়ার রাস্তায় স্বচালিত বাস
নিজে থেকেই চলবে বাস। চালক নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। এ ধরনের বাস নিয়ে অনেক দিন ধরেই পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে স্বচালিত এ ধরনের বাস পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। এ বাসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বিশেষ রাস্তা। গত শুক্রবার ওই রাস্তা প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত করা হয়। প্রকৌশলীরা ওই রাস্তায় স্বয়ংক্রিয় বাস পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন। মানুষ যাতে স্বয়ংক্রিয় বাসে চড়তে অস্বস্তিতে না ভোগেন, সে লক্ষ্য থেকেই এ ধরনের বাসের জন্য ভিন্ন রাস্তা নির্মাণ করেছেন প্রকৌশলীরা।
সিউলের রাস্তায় চলার জন্য স্বয়ংক্রিয় যে বাস তৈরি করা হয়েছে, তা প্রচলিত বাসের মতো নয়। এ বাসের কোনার দিকগুলো গোলাকার। এ ছাড়া এর জানালাগুলো অনেক বড়। এ বাস দেখতে অনেকটা খেলনা গাড়ির মতো।
সিউলের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোরটি টু ডটের প্রধান জিওং সিওং-গাইউন বলেন, এই বাসের নকশা ইচ্ছাকৃতভাবেই এভাবে করা হয়েছে। কারণ, এটাই ভবিষ্যৎ। তিনি আরও বলেন, স্বচালিত গাড়ি তৈরি করতে হলে এর নতুন নকশার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হতো। তাঁদের প্রতিষ্ঠান সে কাজটিই করেছে। গাড়ি তৈরির খরচ কমাতে ও সহজে অন্য গাড়ি তৈরিতে এতে সহজে পাওয়া যায় এমন নানা উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে।
সিউলের ফোরটি টু ডট মূলত উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বা স্টার্টআপ হিসেবে পরিচিত। তারা স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা এখন কিনে নিয়েছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই।
সিওং-গাইউন বলেন, ফোরটি টু ডটের তৈরি বাসে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ক্যামেরা ও রাডার প্রযুক্তি। এতে দামি সেন্সর ব্যবহার করা হয়নি। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে, এ প্রযুক্তিকে সাশ্রয়ী করা। ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের গাড়িতে যাতে সহজে ও নিরাপদে এ প্রযুক্তি স্থানান্তর করা যায়, সেটিও তারা বিবেচনায় নিয়েছেন।
সিউলের রাস্তায় এই বাস যখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে, তখন চালক এটি নিরাপদে চলছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন। শুরুতে এটি ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে। এতে সময় লাগবে ২০ মিনিটের মতো। অ্যাপ ব্যবহার করে এই বাসের জন্য আসন নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া গন্তব্য নির্ধারণ করে দিলে সেখানে গিয়ে বাসটি যাত্রীকে নামিয়ে দেবে।
গত শুক্রবার স্বচালিত এ বাসের যাত্রী ছিলেন ৬৮ বছর বয়সী কিম উয়ি হে-রান। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে ভ্রমণের জন্য কোনো টাইম মেশিনে চড়েছি। ভেবেছিলাম, গতি বেড়ে গেলে ঝিমুনি আসবে; কিন্তু এ ধরনের কিছু বোধ হয়নি।’