এশিয়ার সবচেয়ে বড় কাঠের ভবন

পৌরাণিক গ্রিক দেবি গাইয়ার নামে তৈরি করা হয়েছে কাঠের এই ভবনটি।
নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে

সিঙ্গাপুরকে বলা হয় বাগানের শহর। প্রকৃতিকে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয় এখানে। প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সিঙ্গাপুরে তৈরি করা হয়েছে ছয়তলা একটি কলেজ ভবন।

ভবনটি কাঠ দিয়ে তৈরি। নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির (এনটিইউ) এ ভবনটির বেঞ্চ, দরজার কাঠামো থেকে শুরু করে সবকিছুই কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, ভবনটির মেঝের আয়তন হিসাবে (৪৩ হাজার ৫০০ বর্গমিটার) এটি এখন এশিয়ার বৃহত্তম কাঠের ভবন।

পৌরাণিক গ্রিক দেবি গাইয়ার নামে এ প্রকল্প গত মে মাসে উন্মুক্ত করা হয়। এ ভবন তৈরিতে খরচ হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার সাত কোটি টাকা। ভবন তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে নতুন প্রজন্মের প্রকৌশল প্রয়োগে প্রস্তুত করা কাঠ। কয়েকটি স্তরে কাঠ ও আঠা বসিয়ে কাঠামোগুলো দাঁড় করানো হয়েছে। এতে আলাদা কোনো রং ব্যবহার করা হয়নি। এর নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীরা কোনো বনে হাঁটার মতোই অনুভূতি পান।

এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন জাপানের স্থপতি তোয়ো ইতো। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় নকশার সঙ্গে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন পানি, গাছ ইত্যাদি যুক্ত করার চেষ্টা করি।’

ইতো এর আগে স্থাপত্যে নোবেলখ্যাত প্রিতজকার পুরস্কার পেয়েছেন। গাইয়া প্রকল্পে তিনি সিঙ্গাপুরের নকশাকারী প্রতিষ্ঠান আরএসপির সঙ্গে কাজ করেছেন। এতে ১৯০ সিটের অডিটরিয়াম ও ১ ডজনের বেশি শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার, অফিস ও পড়াশোনার জায়গা রয়েছে।

শৌচাগার, সিঁড়ি বা নিচের মেঝে বাদে সবকিছুতেই কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের স্প্রুস কাঠ ব্যবহার হয়েছে। সিঙ্গাপুরের বিল্ডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন অথরিটি (বিসিএ) দাবি করেছে, কাঠের ব্যবহারে নির্মাণ এলাকায় ধুলা ও শব্দদূষণ কম হয়। এ ছাড়া দ্রুত নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা যায়।

এ ধরনের ভবন নিরাপদ। আগুন লাগলেও সহজে ধসে পড়ে না। কারণ, বিশেষজ্ঞরা এই কাঠের বিমের ওপর একধরনের কাঠের স্তর যোগ করেছেন, যাতে আগুন লাগলেও মূল কাঠামোর কোনো ক্ষতি হবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কাঠের ভবনের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এটি পরিবেশবান্ধব।