ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ সেনাদের পাশাপাশি লড়াই করতে সেনা পাঠাতে শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএস) এ দাবি করেছে। এ তথ্য জানার পর সিউলের পক্ষ থেকে গুরুতর নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি অভিযোগ তোলেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ১০ হাজারের বেশি উত্তর কোরীয় সেনা যুদ্ধে যোগ দিতে পারেন বলে তিনি মনে করেন। জেলেনস্কির এ অভিযোগের পরপরই দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল আজ শুক্রবার এ নিয়ে নিরাপত্তা বৈঠক ডাকেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই যেকোনো উপায়ে এর জবাব দিতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার অভিযোগ, ইতিমধ্যে দেড় হাজার উত্তর কোরিয়ার সেনা রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। নাম প্রকাশ না করে একাধিক সূত্র দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমে বলেছে, উত্তর কোরিয়া প্রায় ১২ হাজার সেনা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে পাঠাতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে রাশিয়াকে যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে—এমন অভিযোগের মধ্যেই নতুন করে সেনা সরবরাহের বিষয়টি সামনে এসেছে। সম্প্রতি ইউক্রেনের পলতাভায় একটি ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যা ছিল উত্তর কোরিয়ার তৈরি।
সম্প্রতি মস্কো ও পিয়ংইয়ং তাদের সম্পর্ক জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং ঘনিষ্ঠ কমরেড বলে মন্তব্য করেন।
গতকালের সিউলের নিরাপত্তা বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় নিরাপত্তা কার্যালয়ের কর্মকর্তা, জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় গোয়েন্দা কার্যালয় ও প্রেসিডেন্টের কার্যালয় অংশ নেয়।
বৈঠকে বলা হয়, এ পরিস্থিতি অগ্রাহ্য করার মতো নয়। তারা যৌথভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সর্ব উপায়ে এর প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য আহ্বান জানাবে।
এর আগে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রুশ সেনাবাহিনী উত্তর কোরীয়দের নিয়ে একটি ইউনিট তৈরি করছে।
এ সপ্তাহের শুরুতে পুতিন কিমের সঙ্গে করা একটি সামরিক চুক্তি অনুমোদনের জন্য একটি বিল উত্থাপন করেছিলেন। তাতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ঘটলে একে অপরকে সাহায্য করার বিষয়টি রয়েছে।
এনআইএস দাবি করেছে, উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়ার চারটি ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এ ছাড়া গত আগস্ট মাস থেকে ১৩ হাজার কনটেইনার যুদ্ধ সরঞ্জাম পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
তবে সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কোরীয় সেনাদের নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে রাশিয়াকে। ভাষা পৃথক হওয়ায় যোগাযোগে সমস্যা ছাড়াও উত্তর কোরীয় সেনাদের সাম্প্রতিক যুদ্ধ অভিজ্ঞতা নেই। তবে তাঁরা সীমান্তে পাহারা দিতে পারবেন। এতে রুশ সেনাদের অন্য ক্ষেত্রে যুদ্ধে যোগ দিতে হবে।