গোতাবায়াকে দেশে ফেরাতে রনিলের সহায়তা চেয়েছে তাঁর দল

শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটের জেরে গণবিক্ষোভের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এখন সেই গোতাবায়াকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তাঁর দল ক্ষমতাসীন শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনা তৎপরতা শুরু করেছে। এ জন্য বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহের সহায়তা চেয়েছে দলটি। দলটির এক নেতা গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিক্ষোভের মুখে গত মাসে প্রথমে মালদ্বীপ এবং পরে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নেন গোতাবায়া। সেখান থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। এরপর পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রনিল। গোতাবায়া বর্তমানে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছেন।

প্রেসিডেন্ট রনিলের কাছে সহায়তা চাওয়ার বিষয়ে শ্রীলঙ্কা পদুজানা পেরামুনার মহাসচিব সাগারা কারিয়াবাসাম বলেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি সামনে এগিয়ে নিতে এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও সুযোগ–সুবিধার ব্যবস্থা করতে আমরা প্রেসিডেন্টের (রনিল) কাছে সহায়তা চেয়েছি।’

তবে কবে নাগাদ গোতাবায়া শ্রীলঙ্কায় ফিরতে পারেন তা এখনো পর্যন্ত ঠিক হয়নি বলে জানান ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। দেশটির সাবেক এক রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম ‘নিউজ ফার্স্ট’–এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহে গোতাবায়া দেশে ফিরতে পারেন।

শ্রীলঙ্কাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর আবার ভিন্ন খবর দিয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য গ্রিন কার্ড পেতে তোড়জোড় শুরু করেছেন গোতাবায়া। সেখানে স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান তিনি। এদিকে গোতাবায়ার দেশে ফেরা নিয়ে বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে রনিল বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্টকে নিয়ে এমন কোনো পরিকল্পনা সম্পর্কে ‘অবগত’ নন তিনি।

গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময় কাটাচ্ছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। দেখা দিয়েছে জ্বালানি তেল, খাবার, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র অভাব। চরমে উঠেছে মূল্যস্ফীতি। দেশটির এই দুরবস্থার জন্য দায়ী করা হচ্ছে গোতাবায়ার নেতৃত্বকে। ২০১৯ সালে অবশ্য তিনিই বিপুল সমর্থন পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রেসিডেন্ট হন। গোতাবায়াই শ্রীলঙ্কার প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি মেয়াদ শেষের আগে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।

গোতাবায়ার পদত্যাগের আগে তাঁর নেতৃত্বের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। একপর্যায়ে গত মাসের শুরুর দিকে তাঁরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয়ে হানা দিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। চালানো হয় ভাঙচুর।