পুরুষদের ঠেকাতে জাদুঘরে নারীদের লাউঞ্জে তৈরি হবে শৌচাগার

তাসমানিয়ার মিউজিয়াম অব ওল্ড অ্যান্ড নিউ আর্ট
ছবি: জাদুঘরের ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ায় একটি জাদুঘরের লাউঞ্জে যেখানে শুধু নারীরা যেতে পারেন, সেখানে সম্প্রতি আদালত পুরুষদের প্রবেশের সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী আইনের ওপর ভিত্তি করে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।

তবে আদালতের এ আদেশ মেনে নিতে রাজি নয় তাসমানিয়ার মিউজিয়াম অব ওল্ড অ্যান্ড নিউ আর্ট। ব্যক্তিগত অর্থায়নে পরিচালিত হয় জাদুঘরটি। জাদুঘরটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন শিল্পসংগ্রাহক ও ব্যবসায়ী ডেভিড ওয়ালশ।

আজ মঙ্গলবার আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ আপিল করেছে। তাদের যুক্তি হলো আদালতের এ আদেশ ‘ঐতিহাসিকভাবে এবং বর্তমান সমাজেও নারীরা যেসব সমস্যার মধ্য দিয়ে যান’, সেগুলো না ভেবে খুব সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেওয়া হয়েছে। আর লেডিস লাউঞ্জে সমতার নামে কেমন করে পুরুষদের প্রবেশের অনুমতি দেন, এটাও বোধগম্য নয়।

গত মার্চে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা জ্যাসন লাউ লৈঙ্গিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি বলেন, তাঁকে লাউঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপর আদালত গত এপ্রিলে ওই আদেশ দেন।

লাউঞ্জটি তৈরি করেছেন শিল্পী কৃশা কাচেলে। তিনি জানান, এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করবেন তিনি।

ওই লাউঞ্জে জাদুঘরের বেশ প্রশংসিত কিছু কাজ আছে। সেখানে রয়েছে পিকাসো থেকে শুরু করে সিডনি নোলামের মতো চিত্রশিল্পীদের আঁকা শিল্পকর্ম। তবে আদালতের এ আদেশের পর লাউঞ্জটি সর্বসাধারণের প্রবেশের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কাচেলের পরিকল্পনা হলো মখমলে মোড়ানো এই লাউঞ্জে নারীদের জন্য শৌচাগার ও গির্জা বানাবেন, যা আইনের মধ্য দিয়ে শুধু নারীদের জন্য নির্ধারিত রাখা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমগুলোর খবরে কাচেলেকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, লেডিস লাউঞ্জে একটি চমৎকার শৌচাগার তৈরি করা হবে। আর সেই সূত্রে লেডিস লাউঞ্জ শুধু নারীদের জন্য বহাল থাকবে। এটি পুরুষেরা দেখারও সুযোগ পাবেন না। সেখানে রাখা হবে চিত্রকর্ম, এর মধ্যে পিকাসোর আঁকা ছবিও থাকবে। তাই ছবি দেখার ফাঁকে যদি কোনো দর্শকের শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তাতে যাতে তাঁর ছবি দেখায় ছেদ না পড়ে, সে জন্য এমনটা করা হবে।

সেই লাউঞ্জে পুরুষেরা যেতে পারবেন শুধু রোববার। তবে কাপড় ইস্ত্রি ও ভাঁজ করা শেখার জন্য। সেদিন নারীরা আসার সময় ধৌত করা কাপড় নিয়ে আসবেন, আর পুরুষেরা সেগুলো ভাঁজ করার চমৎকার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাবেন।

আজ জাদুঘরের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে কাচেলে বলেন, আদালতের এ আদেশ ‘ছদ্মবেশে আশীর্বাদ’ হয়ে এল।