তাইওয়ানেও ‘চীনা বেলুন’
তাইওয়ানের সেনাবাহিনী বলেছে, চীনের উপকূলের কাছের প্রত্যন্ত দ্বীপে একটি বেলুনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে তারা। তাদের ধারণা, বেলুনটি চীন থেকে এসেছে।
তাইওয়ান বলছে, এটি একটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ বেলুন। নজরদারি বেলুন নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উত্তেজনার মধ্যে এমন দাবি করল তাইওয়ান।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে চীন। তাইওয়ান বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, তিন বছর ধরে বেইজিংয়ের সশস্ত্র বাহিনী অঞ্চলটির কাছে জঙ্গি বিমান, ড্রোন ওড়ানোসহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক তৎপরতা চালাচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাইওয়ানের সেনাবাহিনী বলেছে, চীনের ফুঝো উপকূলে তাইওয়ান নিয়ন্ত্রিত মাতসু দ্বীপপুঞ্জের দংগিয়িন দ্বীপে তাদের সেনাসদস্যরা আকাশ থেকে একটি অচেনা বস্তু পড়তে দেখেন। পরে তাঁরা শুটিং রেঞ্জ এলাকায় একটি বেলুনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন।
তাইওয়ানের সেনাবাহিনী বলছে, গোলাকার ধ্বংসাবশেষটির ব্যাস প্রায় এক মিটার। এর সঙ্গে একটি যন্ত্রের বাক্স আছে। সেখানে চীনা ভাষায় লেখা আছে—তাইইউয়ান রেডিও নম্বর ১ ফ্যাক্টরি কো. লিমিটেড। এ ছাড়া জিটিএস১৩ ডিজিটাল ডাটমোসফেরিক শব্দ যন্ত্র ও আবহাওয়া যন্ত্র পাওয়া গেছে।
তাইইউয়ান হলো চীনের উত্তরাঞ্চলের একটি বড় শহর। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ওই কারখানার ঠিকানা খুঁজে পায়নি।
এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে তাইওয়ানের সেনাবাহিনী লিখেছে, ‘প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে এগুলো আবহাওয়া পরিস্থিতি শনাক্তকারী যন্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। আরও মূল্যায়নের জন্য এগুলোকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে।’
তাইওয়ান প্রণালির ওপর দংগিয়িনের অবস্থান। গত বছর তাইওয়ান বলেছে, দংগিয়িনের খুব কাছ দিয়ে একটি ছোট চীনা বিমান উড়ে গেছে। তাদের সন্দেহ, তাইওয়ানের সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করার জন্য চীন বেসামরিক বিমান উড়িয়েছে।
বেলুন নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা চলার মধ্যে গত মঙ্গলবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছিল, তারা তাদের আকাশসীমার কাছে কোনো চীনা নজরদারি বেলুন শনাক্ত করেনি। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে একটি চীনা গোয়েন্দা বেলুন শনাক্ত হয়। এর কয়েক দিন আগে থেকেই সেটি মার্কিন সামরিক স্থাপনার ওপর দিয়ে উড়ছিল। পরদিন এফ-২২ যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বেলুনটি ধ্বংস করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছিল। ৪০টি দেশের ওপর দিয়ে উড়ে এসেছিল বেলুনটি। পরবর্তী সময় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকার আকাশেও শনাক্ত হয় চীনা গোয়েন্দা বেলুন। চীনের দাবি, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের জন্য বেলুনটি আকাশে ওড়ানো হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট পথে না গিয়ে সেটি ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে। এ নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।