মিয়ানমারের প্রবাসী নাগরিকদের জন্য আগাম ভোট গ্রহণ শুরু

থাইল্যান্ডে বসবাসরত মিয়ানমারের নাগরিকেরা নিজেদের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। ব্যাংককে মিয়ানমার দূতাবাসের সামনে, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের বহুল সমালোচিত নির্বাচনে বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অবস্থিত মিয়ানমার দূতাবাসে কিছু ভোটারকে ভোট দিতে সারিতে দাঁড়াতে দেখা গেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেয়। এরপর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যাতে বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী জড়িয়ে পড়ে।

কয়েক বছরের গৃহযুদ্ধে দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেয় জান্তা সরকার। চলতি মাসের শেষের দিকে কয়েক ধাপে এ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।

জান্তা সরকারের দাবি, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মিয়ানমার শান্তি এবং গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, নির্বাচন জান্তা সরকারের ক্ষমতা দৃঢ় করার নতুন কৌশল।

এদিকে নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসছে, ঠিক এমন এক সময়ে প্রায় ১ হাজার ৬০০ গ্রামে ভোট গ্রহণ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।

এর মধ্যেই প্রবাসীদের জন্য থাইল্যান্ডের পাশাপাশি আরও কিছু দেশ ও অঞ্চলে মিয়ানমারের দূতাবাসে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এসব দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে হংকং, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ও চিয়াং মাই।

গতকাল ভোট গ্রহণ উপলক্ষে ব্যাংকে মিয়ানমার দূতাবাসে পুলিশের কড়াকড়ি চোখে পড়েছে। ভোট শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টায় সেখানে প্রায় ২৫ জন ভোট দিয়েছেন।

অধিকাংশ ভোটার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে ৪২ বছর বয়সী মোয়ে মোয়ে লউইন বার্তা সংস্থা এএফপি বলেন, ‘আমি ভোট দিতে এসেছি কারণ, আমি শান্তি চাই। ভালোবাসা আর সহমর্মিতার মধ্যে বাঁচতে চাই। আমি মিয়ানমারের মানুষের মধ্যে ঐক্য দেখতে চাই। আমার বিশ্বাস, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তি আসবে।’

নির্মাণশ্রমিক ও প্রথমবারের মতো ভোট দিতে আসা খুন কিয়াও সোয়ে বলেন, নির্বাচনের পর শিক্ষা খাত এবং অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়ন দেখতে চান তিনি।

থাই শ্রম মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংককে নিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিকের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। তবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার হিসাবমতে, থাইল্যান্ডে বর্তমানে প্রায় ৪১ লাখ মিয়ানমারের নাগরিক বসবাস করেন। তাঁদের অনেকে যুদ্ধের কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এবং বেশির ভাগেরই নথিপত্র নেই।

ব্যাংককে মিয়ানমার দূতাবাসের কর্মকর্তারা এএফপিকে বলেন, কী পরিমাণ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তা তাঁদের জানা নেই। গত ১৫ অক্টোবর ভোট দেওয়া জন্য নিবন্ধের সময়সীমা শেষ হয়।