থাইল্যান্ডে নির্বাচন : জনপ্রিয়তায় এগিয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা

লাল গাড়িতে চড়ে নির্বাচনী প্রচার চালান ফেউ থাই পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা ও স্রেথা থাভিসিন।
ছবি : এএফপি

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককজুড়ে নির্বাচনী আমেজ। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ছিল গতকাল শনিবার। খোলা ট্রাক, গাড়িতে করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। আজ রোববার দেশটির সাধারণ নির্বাচন।

গতকালের প্রচারের মধ্য দিয়ে কয়েক মাসের নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে। আজ ভোটের মাধ্যমে দেশটিতে এক দশক পর ক্ষমতার পালাবাদল ঘটতে পারে।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচা এবারের নির্বাচনে ক্ষমতা ধরে রাখতে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হচ্ছেন। জনমত জরিপ অনুযায়ী, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দল ফেউ থাই ও মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

থাইল্যান্ডে মোট ভোটার ৫ কোটি ২০ লাখ। এসব ভোটারের মধ্যে ৩ কোটি ৩০ লাখ ভোটার নতুন প্রজন্মের। তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। প্রথমবার নির্বাচনে ভোট দেবেন তাঁরা। এবারের নির্বাচনে সামরিকপন্থী, রক্ষণশীল ও জনতুষ্টিবাদী বিরোধী পক্ষ নতুন ভোটারদের মুখাপেক্ষী। জরিপে দেখা গেছে, তরুণ ভোটারদের রায় এবার এক দশকের সরকারের পতন ঘটাতে পারে। একই সঙ্গে সামরিকপন্থী ও রক্ষণশীলদের সামনে আনতে পারে।

গতকাল লাল রঙের একটি গাড়িতে ফেউ থাই পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা ও স্রেথা থাভিসিনকে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায়।

পেতংতার্ন বলেন, ‘আমি প্রথমবার ভোট দিয়ে যাওয়া ভোটারদের ফেউ থাইকে বেছে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের দুই দশকের সরকারে থাকার ইতিহাস রয়েছে। আমরা অতীতেও সফল হয়েছিলাম।’

এবারের নির্বাচনে জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে ফেউ থাই পার্টি। পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা (৩৬) থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে। বিলিয়নিয়ার এ পরিবারের থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। অতীতে নির্বাচনে বিপুল ভোটে তাঁদের দল ক্ষমতায় এসেছে। পরিবার ও দলের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন নির্বাচনে জিততে চান তিনি ও তাঁর দল। শ্রমজীবী মানুষের ভোটে আবার আসতে চান থাইল্যান্ডের ক্ষমতার মসনদে। তাঁকে ঘিরেই এখন আবর্তিত হচ্ছে ফিউ থাই পার্টির রাজনীতি।

নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন কর্মীরা।
ছবি : রয়টার্স

ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে থাকসিন ও ২০১৪ সালে তাঁর বোন ইংলাক ক্ষমতাচ্যুত হন। কারাদণ্ড এড়াতে দুজনই দেশের বাইরে স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন। তাঁদের মিত্ররা বলছেন, রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে তাঁদের মিথ্যা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

থাইল্যান্ডের আরেক রাজনৈতিক দল তারুণ্যনির্ভর মুভ ফরোয়ার্ড সম্প্রতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দলটির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী পিটা লিমজারোয়েনরাত গতকাল নির্বাচনী প্রচারে বলেন, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকালে উঠে মুভ ফরোয়ার্ডকে ভোট দিন।

এদিকে শহর ঘুরে প্রচার চালিয়েছে প্রাউতের ইউনাইটেড থাই নেশন পার্টি। দলের নির্বাচনী ট্রাক থামানোর সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকদের সেলফি তুলতে ও নেতাদের ফুল দিতে দেখা যায়।

গত শুক্রবার প্রাউত নির্বাচনী শোভাযাত্রায় তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁকে এবারের নির্বাচনে জয়ী করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা পরিবর্তন চাইছে। কিন্তু আমরা পরিবর্তন চাই না, যা দেশকে বদলে দেবে। আপনারা কি জানেন, কী ধরনের ক্ষতি হবে তাতে? আমরা আকস্মিক সবকিছু পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ, পরিবর্তন করলে কী ঘটবে, সে সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না।’

গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারের সুযোগ ছিল। তার আগেই নেতারা ব্যাংকক ঘুরে ভোটারদের মন জয় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালান।

আরও পড়ুন