পুতিন-কিমকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন সি, ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের কী জবাব দিল বেইজিং
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করতে বিশাল কুচকাওয়াজে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল চীন। এ আমন্ত্রণের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে বেইজিং। আজ বৃহস্পতিবার এ কথা জানান চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন।
গত বুধবার বেইজিংয়ে ওই কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। কুচকাওয়াজের পর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাতে তিনি লেখেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং–উনকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাবেন, যখন আপনারা মিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।’
ট্রাম্পের ওই বক্তব্য নিয়ে আজ গুও জিয়াকুনকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি বলেন, বিদেশি অতিথিদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এটি ছিল ইতিহাসের স্মৃতিচারণা করতে শান্তিপ্রিয় দেশগুলো ও জনগণের একত্র হওয়া। তৃতীয় কোনো পক্ষের বিরোধীতা করার জন্য চীন কখনোই কোনো দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে না।
এদিকে চীনে সি, পুতিন ও কিমের সাক্ষাতের সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাসও। তাঁর মতে, পশ্চিমবিরোধী ‘নতুন বিশ্বব্যবস্থা’ গড়ে তোলার অংশ হিসেবে তিন নেতা সাক্ষাৎ করেছেন। এটি বিভিন্ন নিয়মনীতির ওপর গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি সরাসরি একটি চ্যালেঞ্জও।
কাজা কালাজের মন্তব্য নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা আশা করি, ওই ব্যক্তিরা তাঁদের কূপমণ্ডূক ধারণা ও অহংকার ত্যাগ করবেন। আর এমন কাজ বেশি করবেন, যা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা এবং চীন-ইউরোপ সম্পর্কের জন্য সহায়ক।’
সি-কিম বৈঠক
সামরিক কুচকাওয়াজের পর আজ বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বৈঠক করেন সি চিন পিং ও কিম জং–উন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বেইজিং। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে কোরীয় যুদ্ধের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে এ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
বৈঠকের আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল, দুই নেতা চীন ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক নিয়ে বড় পরিসরে মতবিনিময় করবেন এবং উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবেন। কৌশলগত যোগাযোগ শক্তিশালী করতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কাজ করতে চায় চীন। শাসনসংক্রান্ত অভিজ্ঞতার আদান–প্রদানও বাড়াতে চায় তারা।
কিম জং–উন সবশেষ চীন সফর করেছিলেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। এরপর গত মঙ্গলবার নিজের নজরকাড়া সবুজ ট্রেনে করে বেইজিংয়ে পৌঁছান তিনি। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেয়ে। কিমের মেয়ের এটিই প্রথম বিদেশ সফরে গিয়ে জনসমক্ষে আসা।
সিয়ের আগে বুধবার পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কিম। এ সময় রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ সমর্থন দেওয়া’ উত্তর কোরিয়ার কর্তব্য বলে উল্লেখ করেন তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সেনা সরবরাহ করেছে পিয়ংইয়ং। সম্প্রতি ওই যুদ্ধে যোগ দেওয়া উত্তর কোরিয়ার সেনাদের প্রশংসা করেছিলেন কিম।