মিয়ানমারে চায়ের দোকানে বিমান হামলায় নিহত ১৮
মিয়ানমারের সায়াগিং অঞ্চলে একটি চায়ের দোকানে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাবায়িন শহরে এ হামলা চালানো হয়। জনাকীর্ণ ওই দোকানে তখন লোকজন টেলিভিশনে বক্সিং ম্যাচ দেখছিলেন।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর পর থেকে গৃহযুদ্ধে টালমাটাল দেশটি। মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদের ওপর প্রায়ই বিমান হামলা চালায় সেনাবাহিনী। এসব হামলায় অনেক সময় বেসামরিক নাগরিকেরাও নিহত হন।
স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, চায়ের দোকানটিতে দুটি বোমা ফেলা হয়। এ ঘটনায় ১৮ জন নিহত হন ও ২০ জন আহত হয়েছেন।
নিরাপত্তার খাতিরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, চায়ের দোকানে অনেক ভিড় ছিল। এ কারণে নিহতের সংখ্যাও বেশি।
ঘটনাস্থলে হামলার ১৫ মিনিট পরে পৌঁছানো এক উদ্ধারকর্মী জানিয়েছেন, ৭ জন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান, বাকি ১১ জন পরে হাসপাতালে মারা যান।
চায়ের দোকানগুলো মিয়ানমারে সামাজিক আড্ডার জায়গা। ওই উদ্ধারকর্মী জানান, আশপাশের অন্তত কয়েক ডজন বাড়িও পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
হামলায় বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি জানান, চায়ের দোকানটিতে বোমা পড়ার সময় তিনি টেলিভিশনে বক্সিং ম্যাচ দেখছিলেন।
বোমা পড়ার শব্দে বধির হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়েছিল উল্লেখ করে এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিমান ওড়ার শব্দ শোনামাত্র মাটিতে শুয়ে পড়ি। দেখলাম, আমার মাথার ওপরে বড় আগুনের কুণ্ডলী। ভাগ্যবান হওয়ায় এ ঘটনার পরেও আমি বাড়ি ফিরতে পেরেছি।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য এএফপি জান্তার মুখপাত্রকে ফোন দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, আজ শনিবার নিহত ব্যক্তিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। হামলায় বিকৃত হয়ে যাওয়ায় নিহত কয়েকজনের মুখ তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই কষ্ট পাচ্ছি, কারণ তাঁদের কয়েকজন আমার খুব পরিচিত ছিলেন।’
মিয়ানমারে গত মে মাসে জান্তার বিমান হামলায় ২২ জন প্রাণ হারান, যাদের ২০ জনই ছিল শিশু। দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর ঘোষিত কথিত যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছিল।