বিচারপ্রক্রিয়া শেষে সু চির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে: জান্তাপ্রধান

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চি ও সেনা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং
ফাইল ছবি: এএফপি

বিচারপ্রক্রিয়া শেষে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। দেশটির সামরিক সরকারের (জান্তা) প্রধান মিন অং হ্লাইং এ কথা জানিয়েছেন। সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় সৃষ্ট সংকটের অবসানে এমনটা জানালেন তিনি। খবর এএফপির।

এক বিবৃতিতে জান্তাপ্রধান বলেন, ‘আইন মেনে তাঁর (সু চি) বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর তাঁর মনোভাবের ওপর ভিত্তি করে আমরা আলোচনার বিষয়টি বিবেচনা করতে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ৭৭ বছর বয়সী সু চি। এর পর থেকে তাঁকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির স্বল্প সময়ের গণতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে।

বেশ কয়েকটি অভিযোগে জান্তা পরিচালিত রুদ্ধদ্বার আদালতে সু চির বিচার চলছে। এখন পর্যন্ত একাধিক মামলায় তাঁর ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তবে এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

বাকি মামলাগুলোয় দোষী সাব্যস্ত হলে কয়েক দশক সাজা হতে পারে গণতন্ত্রপন্থী এই নেত্রীর। সু চির বিরুদ্ধে চলমান এসব মামলার শুনানিতে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ। মামলার বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁর আইনজীবীর ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এসব মামলা কবে নাগাদ শেষ হবে, সে বিষয়েও কোনো ইঙ্গিত দেয়নি জান্তা।

গত জুলাই মাসে সামরিক সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন এএফপিকে বলেন, এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির অবসানে সু চির সঙ্গে সরকারের আলোচনায় বসার বিষয়টি ‘অসম্ভব নয়’। তিনি আরও বলেন, ‘এটা অসম্ভব, আমরা বলতে পারি না।’

আরও পড়ুন

পূর্ববর্তী সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকার জন্য সু চি স্থানীয়ভাবে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবেই বিবেচিত; যদিও জেনারেলদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির মাধ্যমে ২০১৫ সালের নির্বাচনে জয় এবং সরকার গঠনের কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।

তবে বর্তমানে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরতদের অনেকেই বলেছেন, কয়েক দশক আগে নোবেল বিজয়ী নেত্রী যে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, আন্দোলনটিকে এর চেয়ে আরও বেশি এগিয়ে যেতে হবে। ভিন্নমতাবলম্বীরা এ সময়ে এসে বলছেন, দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতি থেকে সামরিক বাহিনীর কর্তৃত্ব স্থায়ীভাবে বিদায় করাই এখন লক্ষ্য।

স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ক্ষমতা দখলের পর সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নে ২ হাজার ২০০–এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে।