সু চি মানসিকভাবে শক্ত আছেন: জানালেন ছেলে কিম

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিফাইল ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ‘মানসিকভাবে শক্ত’ আছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে কিম আরিস। তিনি ছেলেকে দেওয়া চিঠিতে তাঁর অবস্থার কথা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান তিনি।

সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার তিন বছর পর প্রথমবারের মতো ছেলেকে চিঠি লিখলেন সু চি।

২০২১ সালে অভুত্থানের সময় ফেব্রুয়ারির এক সকালে সু চিকে আটক করা হয়। ওই অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়।

শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি (৭৮) অভ্যুত্থানের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন। জান্তা সরকারের আদালতে তাঁকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে সামরিক জান্তা ভুয়া মামলায় তাঁকে সাজা দিয়েছে।

কিম আরিস বলেন, তিনি ‘মানসিকভাবে শক্ত’ আছেন, যেমনটা তিনি সব সময় থাকেন। কো তিন লিন নামেও পরিচিত কিম বলেন, গত বছর তিনি তাঁর মায়ের কাছে ওষুধসহ কিছু জিনিস পাঠিয়েছিলেন। তিনি সে জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁকে ওই চিঠি লিখেছেন।

লন্ডনে বসবাসরত কিম আরিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, তিনি জানুয়ারির শুরুর দিকে চিঠিটি পেয়েছেন। ওই চিঠির মাধ্যমে তিনি প্রথম ইঙ্গিত পেলেন, তাঁর মা বেঁচে আছেন।

কিম বলেন, তাঁর মা পরিবারের সব সদস্যের প্রতি ভালোবাসা জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী সু চিকে অভ্যুত্থানের পর থেকে আর জনসমক্ষে আনা হয়নি। কেবল আদালতে বিচারকাজ চলার সময় তাঁর কিছু ছবি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দেখা গেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, কয়েক মাসব্যাপী বিচারকাজ চলার সময় দাঁতে সংক্রমণের কারণে তাঁর মাথাব্যথা ও বমি হয়েছিল। এমনকি মাঝমধ্যে তিনি খেতে পারেননি।

সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) গত সেপ্টেম্বরে অভিযোগ করেছিল, তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে জান্তা সরকার তাঁর জীবনকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে।

কিম আরিস এএফপিকে বলেন, তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরে দাঁতের সমস্যায় ভুগছেন। তিনি মায়ের কাছে ওষুধ ও ভিটামিন–সমৃদ্ধ খাবার পাঠিয়েছিলেন।

কিম আরিস বলেন, এখনো তাঁর মাকে সেনাবাহিনী নির্মিত রাজধানী নেপিডোতে একটি বিশেষ কম্পাউন্ডে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন

অস্ট্রেলীয় অর্থনীতিবিদ সিয়ান টার্নেল ওই কম্পাউন্ডে কয়েক মাস বন্দী ছিলেন। তিনি গত বছর এএফপিকে বলেন, প্রচণ্ড উত্তাপের সময়ও সেখানে কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্রের ব্যবস্থা নেই, এমনকি বৃষ্টির সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়ে।

টার্নেল সু চির সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। সু চির বিরুদ্ধে করা মামলায় তিনিও আসামি ছিলেন। তাঁকে ক্ষমা ও মিয়ানমার থেকে বহিষ্কারের আগে ওই কম্পাউন্ডে বন্দী করে রাখা হয়।

টার্নেল বলেন, তাঁদের বিচার চলার সময় সু চি অবিশ্বাস্যভাবে নিজেকে শক্ত রেখেছেন।
টার্নেল আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, তিনি আমার মতো যাঁরা তাঁর সঙ্গে আসামি ছিলেন, তাঁদের মনোবল শক্ত রাখার ব্যাপারে সব সময় সচেতন ছিলেন।’