মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় খুলে দিতে তালেবানের প্রতি জাতিসংঘের আহ্বান

গত বছরের মাঝামাঝি তালেবান আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর থেকেই মেয়েশিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের মেয়েদের জন্য উচ্চবিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। আজ রোববার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানিয়ে ঠিক এক বছর আগে মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞাকে ‘দুঃখজনক ও লজ্জাজনক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে তালেবান। এরপর একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ছেলেদের জন্য উচ্চবিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়া হয়। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েশিক্ষার্থীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

এর কয়েক মাস পর এ বছরের ২৩ মার্চ আফগানিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো মেয়েদের জন্য খুলে দেয়। তবে বিদ্যালয়গুলো খুলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই তালেবান নেতৃত্ব আবার মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এর পর থেকে আফগানিস্তানের ১০ লাখের বেশি মেয়েশিক্ষার্থী শিক্ষাবঞ্চিত অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ মিশন ইউনাইটেড ন্যাশনস অ্যাসিস্ট্যান্স মিশন ইন আফগানিস্তান (ইউএনএএমএ)।

মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞার বর্ষপূর্তির বিষয়টি উল্লেখ করে ইউএনএএমএর ভারপ্রাপ্ত প্রধান মারকাস পোৎজেল বলেছেন, এটা দুঃখজনক ও লজ্জাজনক একটি বিষয়। এমন বার্ষিকী যেন আর না আসে। এটি আফগানিস্তানের মেয়েদের একটি প্রজন্ম ও দেশটির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে।

এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘপ্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। টুইটারে তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষা ও জ্ঞানবঞ্চিত হওয়ার এক বছর পেরিয়ে গেল। তারা (আফগানিস্তানের মেয়েশিক্ষার্থীরা) সময়টা কখনো ফিরে পাবে না। মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।’

তালেবান প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা অবশ্য বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। কিন্তু মেয়েদের জন্য বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে অযৌক্তিক কিছু অজুহাত দিচ্ছে তালেবান। তালেবানের কর্মকর্তারা যেসব অজুহাত দিচ্ছেন, এর মধ্যে রয়েছে তহবিল সংকট ও ইসলামি মূল্যবোধ অনুযায়ী পাঠক্রম তৈরির প্রয়োজনীয়তা।

এ মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, মেয়েদের জন্য বিদ্যালয়গুলোতে যাওয়া বন্ধ করা সাংস্কৃতিক বিষয়। কারণ, গ্রামীণ এলাকার অনেক মানুষ তাঁদের মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না।