আণবিক হামলার এক ভুক্তভোগীর চাক্ষুষ বিবরণ

১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর যখন পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে, তখন সাদায়ে কাসাওকার বয়স ১২ বছর। বোমার কেন্দ্রস্থল থেকে তাঁর বাড়ির দূরত্ব প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার। সম্প্রতি তাঁর বক্তব্য শোনা এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলা সুযোগ হয়। এ নিয়ে ২ আগস্ট প্রথম আলো অনলাইনে মঞ্জুরুল হকের লেখা ছাপা হয়। হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে পাঠকদের জন্য লেখাটি আজ আবার দেওয়া হলো

নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছেন কাসাওকা সাদায়ে
ছবি: প্রথম আলো

১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট, প্রায় ৭৮ বছর আগের ওই দিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর যখন আণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে, তখন সাদায়ে কাসাওকা নামের এক বালিকা বিস্ফোরণের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতে অবস্থান করছিল।

সাদায়ে সেদিন বাড়িতে থাকলেও তার সহপাঠীদের অনেককে কিছু দায়িত্ব পালনে যেতে হয়েছিল নগরকেন্দ্রের কাছাকাছি জায়গায়। ইউরোপীয় ভূখণ্ডের বাইরে যুদ্ধ তখনো শেষ হয়নি। সে বছরের প্রায় শুরু থেকেই মার্কিন সামরিক বিমান জাপানের ওপর চালিয়ে যাচ্ছিল নির্বিচার বোমা হামলা।

মার্কিন বাহিনীর এমন নির্বিচার হামলা থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে হতাহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল বোমার আঘাতে সরাসরি প্রাণ হারানো মানুষের চেয়ে বেশি। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে প্রয়োজন ছিল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর কিছু স্থাপনা ভেঙে খোলা জায়গায় রেখে দেওয়া।

নগর কর্তৃপক্ষ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্বাচিত কিছু স্থাপনা ভেঙে খোলা জায়গা তৈরির এ কাজে সাধারণ নাগরিকদের সাহায্য নিয়েছিল। সে দলে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের সঙ্গে গ্রীষ্মের ছুটিতে বন্ধ থাকা স্কুলের শিক্ষার্থীরাও ছিল। হিরোশিমা শহরের কেন্দ্রস্থলে সেই কাজ চলছিল পুরোদমেই।

শহরের বিভিন্ন স্কুল থেকে কাজ করতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতে হতো। আগের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করায় ৬ আগস্ট সাদায়ের জন্য ছিল ছুটির দিন; আর এ কারণেই সে ওই দিন বাড়িতে অবস্থান করছিল। মা–বাবাকেও খুব ভোরে উঠে নগরকেন্দ্রে যেতে হয়েছে কর্মরত তরুণ–তরুণীদের সাহায্য করার জন্য। সাদায়ে সেদিন ওই সকালে বাড়িতে ছিল দাদির সঙ্গে।

এ কারণেই নিশ্চিত মৃত্যু থেকে বালিকা সাদায়ে সেদিন রক্ষা পায়। তবে এর ঠিক পরপরই তাকে যা দেখতে হয়েছে এবং যে দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, সে কারণে পরবর্তী দিনগুলোতে তার মনে হয়েছিল বেঁচে থাকার চেয়ে বরং মৃত্যুই হতে পারত এই যন্ত্রণার জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায়। সেদিন সকালে সাদায়ের সহপাঠীদের মধ্যে যারা দায়িত্ব পালন করতে নগরকেন্দ্রে গিয়েছিল, তাদের কেউই আর জীবিত অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি।

পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় পরিবারের ছবির সামনে সাদায়ে
ছবি: প্রথম আলো

সাদায় বেঁচে আছেন বলেই পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর মুখ থেকে প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা শোনার বিরল এক সুযোগ পেয়েছে। সাদায়েও ভিন্ন এক স্বপ্ন নিয়ে বর্ণনা করছেন সেই ভয়াবহ স্মৃতির গল্প। তাঁর আশা—আগামীর বিশ্ব যেন হয়ে ওঠে এমন এক পৃথিবী, তার সেদিনের দুর্ভাগ্যের শিকার হওয়ার মতো ভয়ংকর এমন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেন পৃথিবীর কোনো মানুষকে আর যেতে না হয়।

সাদায়ে কাসাওকার বয়স এখন ৯০ বছর। এই বয়সে অবসর সময় কাটানোর কথা তাঁর। তবে থেমে নেই তিনি। কেননা, যে ব্রত তিনি নিয়েছেন, তা তাঁকে অবসর নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। সাদায়ে হলেন বিলুপ্তির পথে থাকা জাপানের সেই প্রজন্মের প্রতিনিধি, হিবাকুশা বা আণবিক বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে যাঁদের আখ্যায়িত করা হয়।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজেদের মর্মান্তিক সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা করে যাওয়া সাদায়েরাই এখন নিয়মিত বক্তা। গল্প শোনানো ছাড়াও সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে নিজেদের দুঃসহ অতীতকে তাঁরা সামনে নিয়ে আসছেন যুদ্ধের ভয়াবহতার পাশাপাশি আণবিক বোমা কতটা নিষ্ঠুর, তা বুঝতে মানুষকে সাহায্য করার নিরলস প্রচেষ্টা হিসেবে। সাদায়ের মতে, সময় ফুরিয়ে আসছে। অবসরের সুযোগ তাঁর সামনে নেই।

এখনো সক্রিয় হিবাকুশাদের একজন হিসেবে তার বক্তব্য শোনা এবং অতীতের সেই ঘটনা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করে আরও পরিষ্কারভাবে আণবিক বোমা হামলার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানার জন্য টোকিওতে অবস্থানরত কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিককে হিরোশিমা ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

সেখানেই গত জুলাই মাসের শেষ দিকে সাদায়ে কাসাওকার সাক্ষাৎ এবং তাঁর বক্তব্য শোনার সুযোগ হয়। পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার সাহায্য নিয়ে বিশেষ সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছিলেন সাদায়ে। এরপর আমাদের সুযোগ হয়েছিল তাঁকে কিছু প্রশ্ন করার। আসুন, শুরুতেই তাঁর বক্তব্য শুনে নেওয়া যাক তাঁর নিজের মুখ থেকে।

সাদায়ের কথা

আমার বয়স তখন ১২ বছর। হাই স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। গ্রীষ্মের ছুটিতে হিরোশিমা শহরের কেন্দ্রস্থলে কিছু ভবন ভেঙে ফেলার কাজ আমদের করতে হয়েছে। আমাদের বাড়ি ছিল বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে। সেদিন সকাল থেকেই বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন বেজে চললেও সকাল সাড়ে সাতটার পর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আমি ভেবেছিলাম, বিপদ হয়তো আপাতত কেটে গেছে।

সেদিন আমি দাদির সঙ্গে একা বাড়িতে ছিলাম। আগের দিন অনেক বেলা পর্যন্ত আমাকে কাজ করতে হয়েছিল বলে সেদিন ছিল আমার ছুটি। ফলে সাইরেন বন্ধ হয়ে গেলে কাপড় ধোয়ার কাজ শেষ করি। এরপর উঠানে রোদে শুকানোর জন্য কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়ার সময় দূরে গাঢ় কমলা রঙের আলো আমার চোখে পড়ে এবং এর ঠিক পরপর জানালার কাচ ভেঙে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দৌড়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করার পর মেঝেতে পড়ে যাই এবং কপালে হাত দিয়ে রক্ত অনুভব করতে পারি। ঠিক সে মুহূর্তে অচেতন হলেও কিছুক্ষণ পরই চেতনা ফেরে।

সাদায়ের বর্ণনা শুনে স্কুলশিক্ষার্থীরা তাঁর বাবার এই ছবি আঁকে
ছবি: সংগৃহীত

আগুন তখনো ছড়িয়ে পড়েনি। আমার তখন দুশ্চিন্তা হচ্ছিল, মা–বাবা আর ভাই–বোনদের নিয়ে। চারপাশের লোকজন বোমা হামলা থেকে রক্ষায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলতে থাকায় দাদিকে নিয়ে কাছের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে যাই। বড় ভাই কিচিতারো ওসাকা তখন স্কুলে ছিল।

হামলার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সে ফিরে আসে। আমরা তখন লোকমুখে জানতে পারি যে বাবা আহত হলেও হিরোশিমায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। বাবাকে নিয়ে আসার জন্য কিচিতারো সেখানে যায়। তবে তখন পর্যন্ত আমরা মায়ের সম্পর্কে কোনো খবর জানতে পারিনি।

পরদিন সকালে দুই চাকার হাতে টানা একটি গাড়িতে বাবাকে বাড়িতে নিয়ে আসে কিচিতারো। তবে বাবাকে আমি চিনতে পারিনি। হাতে টানা গাড়িতে শুয়ে থাকা একজন মানুষকে অবশ্য দেখেছিলাম, যার মুখ ফুলে গেছে। কালো হয়ে গেছে পুরো শরীর। বাবার শরীর স্পর্শ করতেই খুলে আসছিল তার ত্বক। পানি পান করতে চাইছিলেন তিনি। তবে আমি তাঁকে পানি দিলাম না। কারণ, এর আগে আমি শুনেছিলাম, বোমার আগুনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আকুতি শুনে পানি দেওয়ার পর সেই পানি পান করে কীভাবে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছিলেন তাঁরা।

আমার বাবার বেলায়ও তা হোক, আমি চাইনি। তবে বাবার পুড়ে যাওয়া দেহের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। দৌড়ে আমি চলে গিয়েছিলাম সামনের মাঠে। তবে সেখানে আমি ভূতের দেখা পাই। পুড়ে যাওয়া মানুষ, ত্বক শরীর থেকে খসে পড়তে থাকা মানুষ দল বেঁধে চলেছেন কাছের এক সামরিক হাসপাতালের দিকে। কী করুণ আর মর্মান্তিক সে দৃশ্য!

এদিকে বাবার পুড়ে যাওয়া দেহে তখন মাছি বসছিল। এর আগে বাবা বলেছিলেন, বিস্ফোরণের পর মায়ের হাত ধরে তিনি দৌড়ে গেলেও মা একসময় কোথায় যেন হারিয়ে যান। এ কথা বলে তিনি মায়ের খোঁজ করার অনুরোধ করেছিলেন আমাদের। বাড়িতে ফেরার পর এক দিন জীবিত ছিলেন আমার বাবা। ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। আমার বাবার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।

মরে যাওয়ার বয়স সেটা নয়; বরং তাঁর ছিল সেই বয়স, মানুষ যখন সংসারের সবার জন্য সুখী জীবন নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করেন। সেই সুযোগ আমার বাবার হয়নি। আর মা সেই যে হারিয়ে গেলেন, এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ আমরা পাইনি।

আমার পরিবারের যে ছবি আপনারা দেখছেন (পাওয়ার পয়েন্টে ফুটে ওঠা ছবির দিকে নির্দেশ করে), আমাদের সুখী পরিবারের ছবি এটা। ১৯৩৮ সালে ছবিটি যখন তোলা হয়, মায়ের পাশে দাঁড়ানো আমার বয়স তখন ছিল পাঁচ বছর। ডান দিকে আছে ভাই কিচিতারো। আমরা দুজন আর বৃদ্ধ দাদি ছাড়া কেউ আণবিক বোমা হামলা থেকে প্রাণে বাঁচেননি।

তবে আমাকে ও ভাইকে সারা জীবন ভুগতে হয়েছে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায়। তবে এর পরেও আমরা বেঁচে আছি হয়তো সেই অভিজ্ঞতার কথা মানুষকে বলতে পারার মধ্য দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য।

যুদ্ধ চলতে থাকা অবস্থাতেও আমরা যারা তখন শিশু ছিলাম, আমাদের মধ্যে ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে আশা ছিল। আমাদের কেউ হয়তো চেয়েছিল শিক্ষক হতে, কেউ হতে চেয়েছিল নার্স। তবে আণবিক বোমা আমাদের সেই স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়ে গেছে, আমরা হয়ে উঠেছি হারিয়ে যাওয়া এক প্রজন্ম। তবে তারপরও আমি এ কারণে কিছুটা ভাগ্যবান যে দাদি ও আমার বড় ভাই জীবিত ছিলেন এবং তাঁরা আমার দেখাশোনা করেছেন।

মা–বাবা এবং পুরো পরিবারকে হারানো অনাথ অনেক শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে ওঠে। তাদের অনেকে প্রতিদিন আশায় ছিলেন যে মা–বাবা নয়তো পরিবারের কেউ একদিন আসবেন তাদের নিয়ে যেতে। তবে অধিকাংশ শিশুর ক্ষেত্রে তা স্বপ্নই থেকে গেছে। সেদিক থেকে আমি দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে উঠলেও তাদের তুলনায় ছিলাম ভাগ্যবান।

বাবার জীবনের একেবারে শেষ মুহূর্তে তাঁকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে আমার ভাই একদিন বের হয়েছিল মায়ের সন্ধানে। তবে মাকে পাওয়া না গেলেও মায়ের পুড়িয়ে ফেলা মরদেহের কয়েকটি হাড় নিয়ে সে ফিরে আসে। তাকে বলা হয়েছিল, অনেকের সঙ্গে বোমার আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া আমার মায়ের হাড় সেগুলো। যুদ্ধ তাই মা–বাবার পাশাপাশি আমাদের হৃদয়কেও হরণ করে নিয়ে গেছে। মা কেন ফিরে এলেন না, সেই প্রশ্ন নিজেকে আমি অসংখ্যবার করেছি।

ভাই ও দাদির স্নেহের ছায়ায় থেকে স্কুলে পড়াশোনা শেষ করি আমি। এরপর হিরোশিমা জেলা সরকারের কার্যালয়ে একটি চাকরিও একসময় পেয়ে যাই। আমার বয়স যখন ২৪ বছর, তখন পারমাণবিক বোমা হামলার আরেক ভুক্তভোগীর সঙ্গে বিয়ে হয় আমার। দুই সন্তান জন্মের পর তেজস্ক্রিয়াজনিত অসুস্থতায় মাত্র ৩৫ বছর বয়সে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়। চাকরির পাশাপাশি দুই সন্তানকে আমি মানুষ করেছি এবং জীবনের চলার পথে অনেকের সাহায্য-সহযোগিতা আমি পেয়েছি।

ঋণ শোধের দায়িত্ব

আণবিক বোমা হামলায় পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হারানোর পরও অনেক মানুষের সাহায্য পেয়েছিলেন বলেই সাদায়ে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছেন। এটাকেই তিনি বেঁচে থাকার প্রক্রিয়ায় পাওয়া ঋণ হিসেবে গণ্য করেন।

সেই ঋণের প্রতিদান হিসেবে অন্যদের জন্য কিছু করার কাজে নিজেকে তিনি নিয়োজিত রেখেছেন। স্থানীয় গার্লস স্কাউটের কর্মকাণ্ডে অনেক দিন ধরে সাহায্য করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে তিনি স্কুল ভ্রমণে হিরোশিমায় আসা শিক্ষার্থী এবং বিদেশি পর্যটকদের কাছে নিজের বোমা হামলার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে শুরু করেন, যে কাজ তিনি এখনো করে যাচ্ছেন।