মিয়ানমারের সেই মেয়েটির গন্তব্য এবার কানাডা

হান লে
ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেই ‘বিউটি কুইন’ কানাডার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের হুমকির পর তিনি থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন। থাইল্যান্ডের অভিবাসন কার্যালয় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিনএনএনকে তাঁর কানাডায় যাওয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন। থাইল্যান্ডেও তিনি শরণার্থী হিসেবে ছিলেন।

২৩ বছর বয়সী হান লে নামক ওই মেয়েটি ২০২১ সালে ‘মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মিয়ানমার’ প্রতিযোগিতার ফাইনালে আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন। তখন তিনি জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নৃশংসতার অভিযোগ তুলেছিলেন। এ বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়াতে ‘মিয়ানমারের জন্য প্রার্থনা করুন’ লেখা একটি ব্যানার ওই অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের পর তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এরপর তিনি মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেখানেই থেকে যান।

এর মধ্যে গত বুধবার ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ডে আসার পর হান লেকে নির্বাসনের হুমকি দেওয়া হয়। তাঁকে ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা কিছুক্ষণের জন্য বসিয়ে রাখেন। তখন তাঁকে বলা হয়েছিল, কর্মকর্তারা তাঁর পাসপোর্টে ত্রুটি খুঁজে পেয়েছেন।

থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন ব্যুরোর ডেপুটি চিফ আর্চায়ন ক্রাইথং আজ বুধবার সিএনএনকে জানিয়েছেন, হান লে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ব্যাংকক ছেড়েছেন। তাঁর শেষ গন্তব্য কানাডা। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
এর আগে হান লে সিএনএনকে বলেছিলেন, তিনি কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে চান।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার উপপরিচালক রবার্টসন বলেন, গত সপ্তাহে ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার সময় হান লেকে রাষ্ট্রহীন করার চেষ্টা করেছিল জান্তা সরকার। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে তাঁকে মিয়ানমারে ফিরে যেতে বাধ্য করতে ফাঁদ পাতা হয়েছিল। মিয়ানমারে যাওয়ামাত্র তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতো।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি, করোনার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন এবং টেলিকমিউনিকেশন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সব মিলে এখন পর্যন্ত সু চির বিরুদ্ধে ১৭ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করে জান্তা সরকারের গোপন আদালত।

সামরিক অভ্যুত্থানের সময় হান লে তাঁর দেশ মিয়ানমারেই ছিলেন। তিনি দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের সড়কে নেমে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। পরে তিনি থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান মিস গ্র্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ২০২০ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে।

আরও পড়ুন