পাকিস্তানে এপ্রিলে ৬০ বছরের রেকর্ড বৃষ্টিপাত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের নাউশেরা জেলায় ভারী বৃষ্টির পর বন্যাকবলিত এলাকা থেকে নৌকায় করে আসছে মানুষফাইল ছবি: এএফপি

পাকিস্তানে ১৯৬১ সালের পর গেল এপ্রিল মাসে বৃষ্টিপাতের নতুন রেকর্ড হয়েছে। সচরাচর এপ্রিলে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, এবার তার দ্বিগুণেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া সংস্থার মাসিক প্রতিবেদনে গত শুক্রবার এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের মাসিক জলবায়ু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলে দেশটিতে ৫৯ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এই মাসের গড় বৃষ্টিপাত ২২ দশমিক ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ‘অনেক বেশি’।

১৯৬১ সালের পর এবার এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাত ও বন্যায় ঘরবাড়ি ধসে কমপক্ষে ১৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অস্বাভাবিক আবহাওয়ার কারণে পাকিস্তান ক্রমেই ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বর্ষা মৌসুমে বিধ্বংসী বন্যার শিকার হচ্ছে দেশটি। পাকিস্তানে সাধারণত জুলাই মাসে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়।

গত ২০২২ সালের গ্রীষ্মে নজিরবিহীন বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ তলিয়ে যায়। বাস্তুচ্যুত হন লাখ লাখ মানুষ। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ওই বন্যায় দেশটির তিন হাজার কোটি ডলার সমপরিমাণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের মুখপাত্র জহির আহমদ বাবর বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। আমাদের এই অঞ্চলে আবহাওয়ার অনিয়মিত ধরনের ওপর এর প্রভাব রয়েছে।’

এপ্রিলে তাপপ্রবাহের কারণে যখন এশিয়ার বেশির অংশে হাঁসফাঁস অবস্থা ছিল, তখন এই মাসে পাকিস্তানে গড় তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৬৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এপ্রিলের সাধারণ তাপমাত্রার চেয়ে এটি শূন্য দশমিক ৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।

পাকিস্তানে বিশ্বের পঞ্চম জনবহুল দেশ। কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটি ১ শতাংশেরও কম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার জন্য অনেক বেশি ভুগতে হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে।