গোতাবায়া দেশে ফিরলেন, মন্ত্রী-রাজনীতিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে
ফাইল ছবি: এএফপি

গণবিক্ষোভের মুখে গত জুলাইয়ে দেশত্যাগ করে পালানো শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশে ফিরেছেন। স্বল্পমেয়াদি ভিসা নিয়ে থাইল্যান্ডে অবস্থানরত গোতাবায়া সিঙ্গাপুর হয়ে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর শ্রীলঙ্কায় ফেরেন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান দেশটির মন্ত্রী ও রাজনীতিকেরা।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর অদূরে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ওই বিমানবন্দর হয়েই গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশে প্রবেশ করেন। গোতাবায়া যখন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তখন শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী ও রাজনীতিকদের একটি দল তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তিনি (গোতাবায়া) উড়োজাহাজ থেকে বের হওয়ার সময় তাঁকে ফুলের মালা দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন রাজনীতিকদের ভিড় লেগে যায়।’

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমগুলোও গোতাবায়ার দেশে ফেরার খবর নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে গোতাবায়া দেশে ফেরেন। কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে তাঁর জন্য একটি বাড়ি ঠিক করে রেখেছে সরকার। তবে বিমানবন্দর থেকে তাঁকে ওই বাড়িতে নাকি সামরিক কোনো স্থাপনায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘গোতাবায়া রাজাপক্ষের জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে নতুন একটি নিরাপত্তাব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে।’

চরম অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে এ বছরের শুরু থেকে শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ শুরু হয়। গত ৯ জুলাই শত শত বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েন। এর কিছুক্ষণ আগে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় সেখান থেকে পালান গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এর কয়েক দিনের মাথায় তিনি দেশত্যাগ করেন।

গত ১৩ জুলাই শ্রীলঙ্কা থেকে পালিয়ে প্রথম মালদ্বীপে যান গোতাবায়া রাজাপক্ষে। পরদিন ১৪ জুলাই তিনি মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সিঙ্গাপুরে গিয়ে তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র দেশে পাঠিয়ে দেন। ১৫ জুলাই তাঁর আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার।

সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর গোতাবায়াকে ১৪ দিনের স্বল্পমেয়াদি ‘ভিজিট পাস’ দেয় দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। পরে তাঁর ভিজিট পাসের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয়। ১১ আগস্ট তাঁর পাসের মেয়াদ শেষ হলে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ত্যাগ করেন তিনি। তখন থেকে থাইল্যান্ডেই ছিলেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে।