‘আল-মানসুর’ নামের ৩৯৬ ফুট দৈর্ঘ্যের প্রমোদতরিটি ১৯৮০ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এটি ছিল সাদ্দামের সম্পদ ও ক্ষমতার প্রতীক। এখন ওই প্রমোদতরি ঘিরে জেলেরা পর্যটক নিয়ে সেখানে ঘুরতে ও বনভোজন করতে যান। সেখানকার জেলে হুসেইন সাবাহি বলেন, ‘যখন এটি সাদ্দাম হোসের মালিকানায় ছিল, তখন কেউ এর আশপাশে যেতে পারত না। এখন আর বিশ্বাস হয় না, এটির মালিক ছিলেন সাদ্দাম হোসেন। আমি এখন যেকোনো সময় এর চারপাশে ঘুরতে পারি।’

সাদ্দাম হোসেন এ প্রমোদতরি তৈরি করলেও তিনি কখনো এতে চড়েননি। ২০০৩ সালের ২০ মার্চ মার্কিন আক্রমণ শুরু হওয়ার পর তিনি প্রমোদতরিটিকে উম কাসর থেকে বসরায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এই প্রমোদতরি মার্কিন বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। পরে সেটি শাত-আল-আরব নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সেটি সেখানেই পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর ওই প্রমোদতরিতে লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর ঝাড়বাতি থেকে শুরু করে আসবাব পর্যন্ত লুট হয়ে যায়। এর লোহার কাঠামোর অংশবিশেষও চুরি হয়ে গেছে।

সাদ্দাম হোসেনের মোট তিনটি প্রমোদতরি ছিল। আল-মানসুর ছিল তার মধ্যে একটি। এতে হেলিকপ্টার নামার ব্যবস্থাসহ ২০০ অতিথি থাকার জায়গা ছিল।

মার্কিন কর্মকর্তাদের ২০০৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, সাদ্দাম হোসেন ও তাঁর পরিবার অবৈধভাবে চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারের মালিক হয়েছে। তাঁর আরেকটি প্রমোদতরি বসরায় হোটেলে রূপান্তর করা হয়েছে।

ইরাকিদের অনেকেই সাদ্দাম হোসেনের এই প্রমোদতরিকে সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তহবিল অনুমোদন করা হয়নি। ইরাকের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করা নাবিক জাহি মুসা বলেন, ‘এই প্রমোদতরি মূল্যবান রত্নের সমান। বাড়িতে রাখা যেকোনো দুর্লভ শিল্পকর্মের মতো বস্তু এটি। প্রমোদতরিটির বর্তমান হাল দেখে আমাদের দুঃখ হয়।’