বিরোধীদের নির্মূলে অঙ্গীকার মিয়ানমারের জান্তার

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ট্যাংক ও ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার পরিবেষ্টিত সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান আজ সোমবার বিরোধীদের ওপর দমন–পীড়ন অব্যাহত ও তা নির্মূলের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, সামরিক বাহিনী দেশে নির্বাচনের আয়োজন করবে। দেশে ভোটের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্টসংখ্যক এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, এমন কথা স্বীকার করার কয়েক সপ্তাহ পর তিনি এমন মন্তব্য করলেন। সেনাবাহিনী দুই বছর আগে অং সান সু চির নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ চলছে।

এদিকে অভ্যুত্থান জাতিগত বিদ্রোহীদের সঙ্গেও নতুন করে লড়াইয়ের সূত্রপাত ঘটায় এবং কয়েক ডজন জান্তাবিরোধী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’–এর (পিডিএফ) জন্ম দেয়। এর ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এখন যুদ্ধে বিধ্বস্ত এবং আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ঘোষিত রাজধানী নেপিডোতে বার্ষিক সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া প্রায় আট হাজার সেনাসদস্যের উদ্দেশে মিন অং হ্লাইং বলেন, জান্তা সরকার বিরোধীদের ও তাদের সমর্থনকারী জাতিগত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী ‘চূড়ান্ত পদক্ষেপ’ নেবে।

‘জাতীয় ঐক্য সরকারের’ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এনইউজির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও এর অনুগত তথাকথিত পিডিএফকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, জান্তা সরকার জরুরি অবস্থা শেষ হলে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে।
গত মাসে সামরিক বাহিনী জরুরি অবস্থার মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ও নির্বাচন স্থগিত করে। এর আগে তারা আগস্ট নাগাদ দেশে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

মিন অং হ্লাইং কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বলেন, যেকোনো নির্বাচনের আগে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ বজায় থাকা অতি গুরুত্বপূর্ণ।

স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষণ গ্রুপের মতে, মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে ৩ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদিকে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে যুদ্ধের কারণে ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে।