বানরের ‘দখলে’ শহর

লোপবুরিতে ফল খাচ্ছে বানরের দলরয়টার্স

শহরটিতে চীনা বিনিয়োগ স্থগিত হয়ে গেছে, ক্রেতারাও তেমন আসছেন না। ব্যবসায়ীরাও ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। একসময়ের বাণিজ্যে সমৃদ্ধ শহরটির পরিবেশ এখন অনেকটাই ভুতুড়ে। কারণ, শহরটি এখন লম্বা লেজওয়ালা হাজারো বানরের দখলে। মধ্য থাইল্যান্ডের লোপবুরি শহরের স্থানীয় অর্থনীতি এখন শঙ্কার মুখে। 

বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও স্টোর তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে শহর ছেড়ে চলে গেছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বানরের নিয়ন্ত্রণে এখন শহরটি। 

পিঙ্গিয়া শপিং সেন্টারের প্রতিনিধি সুরাচাত চানপ্রাসিত বলেন, বানরেরা প্রায়ই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে এবং কেনাকাটা করতে আসা গ্রাহকদের হয়রানি করে। শুধু এটুকুতে থেমে থাকে না, এরা দোকানের সামনের অংশ ভাঙচুর করে। ফলে দোকানমালিককে মেরামতের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। একপর্যায়ে তাঁরা সেখান থেকে চলে যান। 

এসব বানরের দলের যন্ত্রণায় স্থানীয় শপিং সেন্টারে যেতে লোকজন উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। দুই বছর ধরে সেখানকার বাজার পরিস্থিতি সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। একসময় যে বাজার ছিল ১০ কোটি বাথের, তা এখন ৭ কোটির। দোকানিদের অনেকে ইজারা বাতিল করে চলে যেতে যাচ্ছেন। তাই শপিং কর্তৃপক্ষ দোকানমালিকদের ভাড়াও কমিয়ে দিয়েছে।

সুরাচাত বলেন, একজন চায়নিজ বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। কিন্তু তিনি যখন দেখলেন এই শহরে বানরের উৎপাতের সমাধান হয়নি, তখন তিনি বিনিয়োগ স্থগিত করেন।   

থাইল্যান্ডের দৈনিক পত্রিকা খাওসোদ-এর খবরে বলা হয়, লোপবুরি চেম্বার অব কমার্স বলেছে, ভবনগুলোর উচ্চতা সীমিত করার আইন এবং ঐতিহ্যগত স্থাপনাগুলোর যে অবস্থায় আছে, সেই পরিবেশ বজায় রাখতে গিয়ে বানরের সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

লবি গ্রুপের প্রধান পংসাতর্ন চাইচানাপানিচ বলেছেন, জনপ্রিয় ফ্রা প্রাং স্যাম ইয়ট মন্দিরের উল্টো দিকের ব্যবসাকেন্দ্রগুলো ইতিমধ্যে ফাঁকা হয়ে গেছে।

পংসাতর্ন বলেন, শহরের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং পর্যটকদের সংখ্যা বাড়াতে হলে নগর এলাকায় বানর ব্যবস্থাপনায় অনুমতি দিতে আইন সংশোধনসহ নীতিগত পরিবর্তন আনতে হবে।

লোপবুরি ও এর বানরের বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পর্যটকেরা সাধারণত এই বানরদের খাওয়ান এবং তাদের সঙ্গে সেলফি তুলতে পোজ দেন। এই অঞ্চলে একটি বার্ষিক বানর উত্সবও অনুষ্ঠিত হয়।