মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিন্দায় জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসছবি: ডয়চে ভেলে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে হামলা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করায় দেশটির সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে এ সমালোচনা করেন।

বিবৃতিতে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, রাখাইনসহ বিভিন্ন জায়গায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় অসংখ্য বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব এসব হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি জান্তা ও আরাকান আর্মির সংঘাতের মাঝখানে আটকে পড়া রোহিঙ্গাদের ওপর ‘চলমান নিধন’ বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস।

রাখাইন প্রদেশে গত নভেম্বরে জান্তার ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা গ্রহণের পর তাদের বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির এটাই প্রথম হামলা।

আরাকান আর্মির হামলার জবাবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ সীমান্তেও এ অভিযানের প্রভাব পড়ে। এ অভিযানে অনেক বেসামরিক মানুষ মারা যাওয়ায় বৃহস্পতিবার নিন্দা জানিয়েছেন গুতেরেস।

আরাকান আর্মি বলেছে, তারা দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে আরও স্বায়ত্তশাসন চায়। এই রাখাইন প্রদেশই রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি। এই জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচারে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

আরাকান আর্মির দাবি, রাখাইনের রাজধানী সিতোয়ের বিয়ায়েন ফিউ গ্রামে সম্প্রতি হামলা জানিয়ে অন্তত ৭০ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে জান্তা। জান্তা আরাকান আর্মির এই দাবিকে ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

রাখাইনে বর্তমানে ফোন ও ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই সংঘাতের খবর নিশ্চিত করার উপায় নেই।

এদিকে রোহিঙ্গারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে তাদের জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেওয়া, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া ও লুটপাটের অভিযোগ করেছে। তা ছাড়া সেনাবাহিনীও রোহিঙ্গাদের জোর করে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।

মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর হামলায় ২০১৭ সালে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকায় একাধিক ক্যাম্পে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করত।