মিয়ানমারের নিন্দায় আসিয়ান

আসিয়ান পতাকা
ছবি : রয়টার্স

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের মন্ত্রীরা মিয়ানমারের সংকট সমাধানের পরিকল্পনায় অগ্রগতির অভাবের নিন্দা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে আসিয়ানের আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে মিয়ানমারের জান্তাকে এ–সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। শুক্রবার জোটটি এ কথা জানিয়েছে। খবর এএফপির

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে মিয়ানমার। স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠুর নিপীড়নে নিহত মানুষের সংখ্যা ২ হাজার ১০০ ছাড়িয়েছে।

মিয়ানমারের জেনারেলদের কট্টর অবস্থান নিয়ে আসিয়ান সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। গত মাসে গণতন্ত্রপন্থী দুই নেতাসহ চার কারাবন্দীকে ফাঁসির ঘটনায় এ ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে।

মিয়ানমার সংকট সমাধানে ১০ সদস্যের আসিয়ানের প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত নিষ্ফল প্রমাণিত হয়েছে। গত বুধবার আসিয়ানের দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে আয়োজিত এ বৈঠকে মিয়ানমারকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাঁচ দফা ঐকমত্যের সময়োপযোগী ও সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে সীমিত অগ্রগতি ও নেপিদো কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতির অভাবে আসিয়ানের মন্ত্রীরা গভীরভাবে হতাশ।

বিবৃতিতে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, আসিয়ান সনদের ২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নীতি লঙ্ঘন করায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

এ সপ্তাহের শুরুতে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ধারণা করা হয়, এ বছর শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনের আগে আসিয়ানের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মিয়ানমার অগ্রগতি না দেখালে তারা আসিয়ান থেকে বরখাস্ত হওয়ার মুখে পড়তে পারে।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। দেশটিতে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। গ্রেপ্তার করা হয় নোবেল বিজয়ী গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির বেসামরিক সরকারের নেতাদের। সেনাশাসনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে মিয়ানমারের জনগণ। এর পর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে পুরো মিয়ানমার। বছরের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভ-প্রতিবাদে মিয়ানমারে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিক্ষোভ দমনের নামে নিজ দেশের মানুষের ওপর শক্তি প্রয়োগের সমালোচনা করেছে আসিয়ান। মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে এ জোট। এর আগে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আসিয়ানের শীর্ষ বৈঠকেও যোগ দেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং।