সামরিক আইন জারি ঘিরে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসন নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। বিরোধী জোট প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে অভিশংসন করতে আগামী শনিবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি করতে চায়। তবে দ্বিধাবিভক্ত ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টি অভিশংসনের পক্ষে ভোট না দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের জন্য দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আইনপ্রণেতার ভোট প্রয়োজন হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ৩০০ সদস্যের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ইউনের পিপল পাওয়ার পার্টির নিয়ন্ত্রণে আছে ১০৮টি আসন। ফলে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে হলে ক্ষমতাসীন দলের কমপক্ষে আট আইনপ্রণেতার সমর্থন লাগবে। এদিকে প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রেসিডেন্টের সামরিক আইন জারিকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেছে। দলটি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর আগামী শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায় ভোটাভুটি আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
এদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন প্রেসিডেন্ট। নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে সৌদি আরবে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চোই বিয়াং-হিয়াককে বেছে নিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সামরিক আইন জারির ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে দক্ষিণ কোরিয়া। অভিশংসনের মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট ইউন। ছয়টি দল নিয়ে গঠিত বিরোধী দলগুলোর একটি জোট বুধবার প্রেসিডেন্টের অভিশংসন চেয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
তবে এই সংকট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে পিপল পাওয়ার পার্টি। তারা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের বিরোধিতা করবে তারা। পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত ইউনের মেয়াদ পূর্ণ হতে আরও দুই বছর বাকি।
এদিকে এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহের’ অভিযোগ তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ।
নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নাম ঘোষণা
সামরিক আইন জারির দায় মাথায় নিয়ে গত বুধবার পদত্যাগ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পরামর্শেই ইউন সামরিক আইন জারি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে এর দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন কিম।
নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চোই সম্পর্কে ইউনের চিফ অব স্টাফ চাং জিন-সুক বলেন, ‘চোই একজন নীতিমান ব্যক্তি, যিনি নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করেন এবং প্রবিধান মেনে চলেন।’