দক্ষিণ চীন সাগরে দ্রুত আচরণবিধি চান নেতারা

এ ছাড়া মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ বন্ধে দ্রুত লড়াই থামিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক শান্তি আলোচনার দাবি নেতাদের।

আসিয়ান সম্মেলনে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধি ছাড়াও  যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেনছবি : রয়টার্স

দক্ষিণ চীন সাগরে আন্তর্জাতিক আইন মেনে দ্রুত একটি আচরণবিধি চুক্তি করার কথা বলেছেন দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার নেতারা। এ ছাড়া মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ বন্ধে দ্রুত লড়াই থামিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক শান্তি আলোচনার দাবি জানান তাঁরা। আজ রোববার আসিয়ান সম্মেলনে এ বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

লাওসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোটের (আসিয়ান) ১০ সদস্যরাষ্ট্রের নেতাদের বৈঠক শেষ হয়েছে গত শুক্রবার। বৈঠক শেষে আসিয়ান চেয়ারম্যানের বিবৃতিতে বৈঠকে ঐকমত্যের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

আসিয়ানভুক্ত ১০টি দেশ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, ব্রুনেই দারুসসালাম ও থাইল্যান্ড ছাড়াও সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

দক্ষিণ চীন সাগরে বিরোধপূর্ণ জলসীমা ঘিরে চীনের সঙ্গে আসিয়ান সদস্য ফিলিপাইন ও সম্প্রতি ভিয়েতনাম মুখোমুখি হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে চীন। সেখানকার বিরোধ ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনায় যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ফিলিপাইন আক্রান্ত হলে তাকে প্রতিরক্ষা সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে প্রতিবছর তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়। এবারের আসিয়ান সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে আচরণবিধির বিষয়টি। যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে এবারের সম্মেলনে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আসিয়ান সদস্যদের বিতর্ক তৈরি হয়। চীন ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে ১৯৮২ সালের জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী সমুদ্রের আইনের বিষয়ে আপত্তি করা হয়।

আসিয়ানের বিবৃতিতে আস্থা তৈরির ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়, যাতে দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে পারে এবং ভুল–বোঝাবুঝির অবসান হয়। এ সময় বিরোধ নিষ্পত্তিতে আচরণবিধি তৈরির আলোচনা ইতিবাচক অগ্রগতির কথা জানানো হয়। চীন ও আসিয়ানের পক্ষ থেকে এ নিয়ে ২০০২ সালেই সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের আগে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়নি।

এদিকে মিয়ানমার নিয়ে আসিয়ানের পক্ষ থেকে দ্রুত সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া মানবিক সহায়তা প্রদানের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সংলাপের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে মিয়ানমার নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে আসিয়ান।