ইমরানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা, পাল্টা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পিটিআই
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) কর্মীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার পুলিশের সন্ত্রাস দমন বিভাগে (সিটিডি) এ মামলা করা হয়েছে। তোশাখানার মামলায় পিটিআই চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আদালতে হাজির করার সময় এসব ভাঙচুর চালানো হয়। এদিকে পিটিআইও পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তোশাখানার মামলায় শনিবার সকালে ইমরান খান লাহোরে তাঁর জামান পার্কের বাসা থেকে গাড়িবহর নিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যান। এ সময় তাঁর শত শত কর্মী-সমর্থক তাঁকে ঘিরে রাখেন। ইসলামাবাদ আদালত চত্বরের বাইরে ঢোকার আগে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। ইমরান অভিযোগ করেন, তাঁকে আদালত ভবনে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। এদিকে ইমরান খান আদালতের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পরপর তাঁর জামান পার্কের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে থাকা ইমরানের কর্মী-সমর্থকদের সরিয়ে দেয় তারা। ভারী সরঞ্জাম ব্যবহার করে ইমরানের বাড়ির ফটক ভেঙে ফেলা হয়। বেশ কয়েকজন পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া পিটিআই কর্মী, পলাতক নেতাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদসহ ১০টি অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
এফআইআরে আলী আমিন গান্দাপুর, মুরাদ সাইদ, আমির মেহমুদ কিয়ানি, আসাদ কায়সার, শিবলি ফারাজ, আসাদ উমর, ওমর আইয়ুব খান, আলী নওয়াজ আওয়ান, হাসান নিয়াজিসহ প্রায় ১৭ জন নেতার নাম রয়েছে।
এফআইআরে বলা হয়েছে, পিটিআইয়ের কর্মীদের হামলায় পুলিশের চেকপোস্ট এবং আদালত ভবনের প্রধান ফটক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অগ্নিসংযোগ, পাথর নিক্ষেপ এবং আদালত ভবনে ভাঙচুরের অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরী রোববার বলেছেন, তাঁর দলও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে। লাহোরের জামান পার্ক এলাকায় পাকিস্তানের চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ মামলা করা হবে।
টুইটার পোস্টে ফাওয়াদ লিখেছেন, দলের আইনি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। লাহোরের হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে পুলিশ যে কায়দায় ইমরান খানের বাসভবনে প্রবেশ করেছে, তাতে ঘরের পবিত্রতা বজায় রাখার সব বিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। তারা জুস বক্সও সরিয়ে নিয়েছে। নির্দোষ মানুষদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
পিটিআইয়ের এ নেতা মনে করেন, এসব ঘটনাসহ ইসলামাবাদে যা কিছু ঘটেছে, তা দেশে চলমান সাংবিধানিক সংকটের কারণ।
ইমরানের বিরুদ্ধে তোশাখানার মামলাটি করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। এ মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পাওয়া উপহার রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার ইমরানকে গ্রেপ্তারের জন্য লাহোরের জামান পার্কে তাঁর বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। পরে ইমরান খানের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ সমর্থকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সমর্থকেরাও ইটপাটকেল ছোড়েন। ইমরানকে গ্রেপ্তার করার কোনো সুযোগ পুলিশকে দেননি সমর্থকেরা।
শনিবার তোশাখানা মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।