কাঠের নৌকায় সাগর পেরিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় ২৫০ রোহিঙ্গা

কাঠের নৌকায় সাগর পাড়ি দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছান প্রায় ২৫০ রোহিঙ্গা
ছবি: এএফপি

কাঠের নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছেছেন প্রায় ২৫০ রোহিঙ্গা। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে আচেহ প্রদেশের উপকূলে পৌঁছান তাঁরা। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। এ নিয়ে গত ৭২ ঘণ্টায় প্রায় ৬০০ রোহিঙ্গা সাগর পাড়ি দিয়ে ইন্দোনেশিয়া গেলেন।

মিয়ানমারে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই ঝুঁকি নিয়ে সাগর পেরিয়ে ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। গতকাল আচেহ উপকূলে পৌঁছানো রোহিঙ্গাদের নৌকা থেকে সৈকতে নামতে প্রথমে বাধা দেন স্থানীয় অনেকে। এ সময় ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি চেয়ে ওই রোহিঙ্গাদের অনুনয়-বিনয় করতে দেখা যায়।

স্থানীয় একটি গ্রামের প্রধান মুকতার উদ্দিন জানান, নৌকাটিতে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রথমে খাবার দিয়ে সহায়তা করেন স্থানীয় লোকজন। ভেবেছিলেন খাবার পেয়ে হয়তো তাঁরা চলে যাবেন। তবে নৌকা থেকে কয়েকজন তরুণ একপর্যায়ে সৈকতে নেমে আসেন। এখনো সৈকত থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে নৌকাটিতে অবস্থান করছেন অনেকে।

মুকতার উদ্দিনের ধারণা, আজ আচেহ প্রদেশে পৌঁছানো নৌকায় ২৫০ থেকে ২৬০ রোহিঙ্গা ছিলেন। রোহিঙ্গা শরণার্থী মনজুর আলম বলেন, ওই নৌকায় ২৪৯ জন রোহিঙ্গা ছিলেন। নৌকাটি ২০ দিন আগে বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল ছেড়ে এসেছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা।

নৌকাটি থেকে সৈকতে নামার পর অনেক তরুণ ইন্দোনেশিয়ায় থাকার সুযোগ চেয়ে অনুনয়–বিনয় করেন
ছবি: এএফপি

এদিকে উপকূলের কাছে ওই নৌকায় থাকা রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছেন মনজুর আলমসহ আরও দুজন। ২৩ বছর বয়সী মনজুর বলেন, ‘নৌকায় অনেক ছোট শিশু রয়েছে। দয়া করে তাদের বাঁচান। তারা খুবই ক্ষুধার্ত। তারা কিছুই খেতে পায়নি।’

এর আগে গতকাল বুধবার আরেকটি নৌকায় করে ১৪৭ জন আচেহ প্রদেশে পৌঁছান বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা। আগের দিন মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর কমান্ডার আন্দি সুশান্ত জানান, সেদিন আরও ১৯৬ রোহিঙ্গা আশ্রয়ের সন্ধানে সাগর পেরিয়ে ইন্দোনেশিয়া যান।

প্রতিবছর সাধারণত এই সময়টাতে রোহিঙ্গারা সাগর পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেন বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়া। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের একটি বা দুটি নৌকা এখনো সাগরে রয়েছে। সেগুলো ইন্দোনেশিয়ার দিকে যাচ্ছে।