বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত এশিয়া, শত শত প্রাণহানি
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এশিয়া। টানা ভারী বর্ষণে বন্যা দেখা দিয়েছে দেশে দেশে। আকস্মিক বন্যায় প্রাণ হারাচ্ছে শত শত মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
বৃষ্টি, বন্যা, ভূমিধসে চলতি মাসের প্রথমার্ধে শুধু ভারতে প্রাণহানি হয়েছে শতাধিক। উত্তর ভারতের বড় একটা অংশ বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত। রেকর্ড বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বাসিন্দারা। বাড়িঘর–ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ।
ভারতে বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হিমাচল প্রদেশ। শুধু ওই রাজ্যে অন্তত ৮৮ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ৫ দিনে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বেড়ে শহরে ঢুকে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট ও আবাসিক এলাকা।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ৮ শিশুসহ ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর চলতি সপ্তাহে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
ভারী বর্ষণে গত কয়েক দিনে চীনের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চংকিং। বন্যা ও ভূমিধসে ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর–রাস্তাঘাট। কয়েক হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্তত ২৪টি জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের বিভিন্ন শহরে এ মৌসুমে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির কিয়ুসু দ্বীপ। বৃষ্টি ও বন্যায় দ্বীপটিতে অন্তত আটজনের মৃত্যুর কথা জানা গেছে। ভারী বৃষ্টিতে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে চার লাখের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, ‘এমন ভারী বৃষ্টি কখনোই হতে দেখিনি আমরা।’
ভারী বৃষ্টিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে কয়েক হাজার বাড়ি বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাতিল হয়েছে শত শত ফ্লাইট। ভারী বৃষ্টি নিয়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু বলেছেন, প্রাণহানি ঠেকানোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শুধু এশিয়া নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে বন্যার ঝুঁকি বেড়েছে। বন্যাসহ বিরূপ আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় অনেক দেশকে হিমশিম খেতে দেখা যাচ্ছে।