টিকাড সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানে আসছেন আফ্রিকার নেতারা

জাপানের ইয়োকোহামায় আগামী বুধবার (২০ আগস্ট) আফ্রিকার উন্নয়নবিষয়ক নবম টোকিও আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হচ্ছে। খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতি থাকা দেশ জাপানের জন্য আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্র ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৯৩ সালে জাপান সরকার সংক্ষেপে টিকাড নামে পরিচিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সূচনা করেছিল।

সেই সময়ের পর থেকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিক থেকে এশিয়া মহাদেশে জাপানের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আগ্রাসী বিনিয়োগ তৎপরতা চালিয়ে যায়। ফলে জাপানের জন্য আফ্রিকা আরও বেশি গুরুত্ব নিয়ে উপস্থিত হতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতার সূত্র ধরে টিকাডের আকার বৃদ্ধি পায়।

তিন বছর পরপর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এবার নবম আয়োজন হচ্ছে। আফ্রিকা মহাদেশের অধিকাংশ দেশ ছাড়াও জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এবারের সম্মেলনে যোগ দেবেন। আয়োজনে যোগ দিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামীকাল (১৯ আগস্ট) টোকিও আসছেন।

জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মেলনে যোগ দিতে আসা আফ্রিকার নেতাদের স্বাগত জানানোর সব আয়োজন শেষ করেছে। অধিকাংশ নেতা ১৯ আগস্ট টোকিও এসে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এবারের সম্মেলনের নতুন একটি দিক হচ্ছে, ভারত মহাসাগর থেকে শুরু করে আফ্রিকা মহাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত অর্থনৈতিক একীভূতকরণ ও উন্নয়নবিষয়ক একটি উদ্যোগের প্রস্তাব।

জাপান সরকারের কর্মকর্তারা দেশের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, টিকাড সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু নতুন এ প্রস্তাবের ঘোষণা প্রচার করবেন। নতুন এ কাঠামো আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশে কর্মরত জাপানি কোম্পানির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধা বড় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টিকাড সম্মেলনের পাশাপাশি জাপানের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠন জেট্রো ইয়োকোহামার সম্মেলন কেন্দ্রে আফ্রিকায় রপ্তানি ও বিনিয়োগে নিয়োজিত জাপানের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের রপ্তানি পণ্যের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করবে।

টিকাডের মূল লক্ষ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হওয়ায় রাজনৈতিক আলোচনার খুব বেশি সুযোগ সেখানে নেই। তবে তা সত্ত্বেও আফ্রিকা মহাদেশে চীনের ক্রমশ সম্প্রসারিত প্রভাবের মুখে জাপান কতটা সুবিধা আদায় করে নিতে পারবে, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি আফ্রিকা মহাদেশের ওপর আলোকপাত করা জাপানি গবেষকেরাও সেদিকে ঘনিষ্ঠ নজর রাখছেন।

বিশেষ করে শুল্ক নিয়ে বিশ্বজুড়ে দেখা দেওয়া নতুন অনিশ্চয়তার আলোকে জাপানসহ অগ্রসর অন্যান্য দেশের জন্য বিকল্প কোনো পথের সন্ধান আফ্রিকা দিতে পারবে কি না, সেটাও সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় উঠে আসছে। ফলে টিকাডের নবম আয়োজনকে অনেকেই এখন আরও বেশি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।