মিয়ানমারে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ১০০: এনইউজি
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের (জান্তা) বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাচ্যুত প্রশাসনের ছায়া সরকার এ কথা জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের কান্ত বালু পৌর শহরে এই বিমান হামলা চালানো হয়।
জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্যের সরকারের (এনইউজি) শ্রম মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ওই হামলায় শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ বহু নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছেন। এই ‘জঘন্য কর্মকাণ্ড’ যুদ্ধাপরাধের শামিল বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরে নতুন দপ্তর উদ্বোধন উপলক্ষে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর জান্তা সরকারের যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণ ও গুলি চালানো হয়।
তবে হামলার অভিযোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি সামরিক সরকার। এ বিষয়ে জানতে সামরিক সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিএনএন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ইরাবতী ও অন্যান্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রকাশ করা ভিডিও এবং ছবিতে বিমান হামলার পর ভুক্তভোগীদের মরদেহের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ভবন, গাড়ি ও ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। তবে এসব ভিডিও এবং ছবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি সিএনএন।
এনইউজির কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রী মান উইন খাইন থান টুইটারে বলেছেন, ‘বিমান হামলার মাধ্যমে চালানো এই হত্যাযজ্ঞে তিনি মর্মাহত।’
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসে সামরিক বাহিনী। এর বিরুদ্ধে দেশটিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু হলে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে তা দমন করে।
রক্তক্ষয়ী এ অবস্থাকে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ও অন্যরা গৃহযুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। এতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গত অক্টোবরে কাচিন রাজ্যে একটি কনসার্টে বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শিল্পী ও সশস্ত্র জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরা। এরপর যত হামলা হয়েছে, তার মধ্যে গতকালের হামলাটি ছিল ভয়াবহ।