অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নাক না গলাতে বলল চীন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং
ফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে চলতি বছরের মধ্যেই একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা গত বুধবার এ তথ্য জানান। এএফপির খবর।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, দুই নেতার মধ্যে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সির সঙ্গে সাক্ষাৎ করা দারুণ ব্যাপার হবে। এই কর্মকর্তা বলেন, তাঁরাও আশা করেন, দুই নেতার মধ্যে ভার্চ্যুয়ালি হলেও দেখা-সাক্ষাৎ হোক।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ইতালির রোমে জি-২০ জোটের আসন্ন সম্মেলনে সি অংশ নেবেন না। সির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠানে বাইডেনের জন্য এটি একটি ভালো স্থান হতে পারত।

জুরিখে চীনের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক ইয়াং জাইচির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের এক বৈঠকের পর বাইডেন-সি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক আয়োজনের ওই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হলো। ওই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইয়াং ও সুলিভান দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা বৈঠক করেন।

চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, বৈঠকে ইয়াং দুই দেশকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইয়াংকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থাটি জানায়, বৈঠকে তিনি সুলিভানকে বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরকে সহযোগিতা করলে তাতে এই দুই দেশ ছাড়াও গোটা বিশ্ব উপকৃত হবে। আবার চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বিবাদে জড়ালে তাতে এ দুই দেশ ছাড়াও গোটা বিশ্ব ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তাইওয়ান নিয়ে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাব, অস্ট্রেলিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ বিক্রির সিদ্ধান্ত, বেইজিং-ওয়াশিংটন বাণিজ্য বিরোধ ও জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চীনের ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ—এমন নানা চলমান ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাইডেন-সির বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সিনহুয়া জানায়, বৈঠকে ইয়াং তাইওয়ান, হংকং, জিনজিয়াং ও অন্যান্য ইস্যুতে তাঁর দেশের অবস্থান পুনরায় তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে এসব ইস্যু ব্যবহার না করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জুরিখ বৈঠকের পর ব্রাসেলস ও প্যারিস সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে সুলিভানের। ইয়াংয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক নিয়ে সেখানে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মিত্রদেশ ও অন্য অংশীদারদের কাছে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরবেন।