অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত এ বছর খুলছে না

করোনার কারণে সিডনিতে বাতিল হয়ে যাওয়া ফ্লাইটের তালিকা। সিডনি বিমানবন্দর
ছবি: রয়টার্স

ভ্রমণকারীদের জন্য চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত পুরোপুরি খোলার সম্ভাবনা নেই। দেশটির বেশির ভাগ মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনা গেলেও সংক্রমণ রোধ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে এ কথা জানান দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান।

অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্রেটারি ব্রেনডেন মারফি সোমবার অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পকে (এবিসি) বলেছেন, ‘অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা গেলেও আমরা জানি না এটি আদৌ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবে কি না।’ গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ব্রেনডেন বলেন, ‘আমি মনে করি, এ বছরও সীমান্তের এই কড়াকড়ি বহাল থাকবে।’

অস্ট্রেলিয়ায় এই ভাইরাসে ২২ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৯০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগামী মাস থেকে অস্ট্রেলিয়ায় টিকাদান শুরু হবে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ফাইজারের টিকা নেওয়ার পরও নরওয়েতে কয়েকজন বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাই অস্ট্রেলিয়া একটু সময় নিতে চাইছে।

গত বছরের মার্চ মাস থেকে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। এতে অস্ট্রেলিয়ার হাজার হাজার নাগরিক বিদেশে আটকা পড়েছেন। কেউ ফিরতে চাইলে তাঁকে হোটেলে নিজের খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

সীমান্ত বন্ধ থাকায় বন্ধ হয়ে পড়েছে ট্রাভেল অ্যাজেন্সিগুলো
ছবি: রয়টার্স

বিবিসির খবরে বলা হয়, গত বছর দেশটি শুধু প্রতিবেশী দেশ নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত খুলেছিল। কিন্তু বর্তমানে শুধু সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসার ফ্লাইট চালু রয়েছে। দেশটি করোনায় খুবই কম আক্রান্ত, এমন কয়েকটি দেশ, যেমন তাইওয়ান, জাপান ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছে।

এদিকে এ বছরের জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হতে পারে, এমনটা বলার পর অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইনস কান্তাস এ মাসের শুরুর দিকে বুকিং নিতে শুরু করেছিল। তবে তারা এটিও বলেছিল, পুরোটাই নির্ভর করছে দেশটির সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর।

লকডাউন, সর্বোচ্চ মাত্রায় পরীক্ষা ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মধ্য দিয়ে অন্যান্য যেকোনো দেশের তুলনায় অস্ট্রেলিয়া বেশ সফলভাবে করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। আজ সোমবার সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে এখন স্থানীয় কেউ করোনায় আক্রান্ত নন।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, তবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন টেনিস অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ভিক্টোরিয়া রাজ্যে চার বিদেশির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁরা সবাই টেনিসের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের নিয়ে মোট ৯ জন বিদেশি করোনায় আক্রান্ত।

এসব রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দেশটির কর্তৃপক্ষ ৭০ জনের বেশি খেলোয়াড়কে জোরপূর্বক হোটেল রুমে আইসোলেশনে রেখেছে। এ নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিক্টোরিয়া রাজ্যের প্রধান ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘আমি জানি, অনেকেই এ নিয়ে অনর্থক কথা বলছেন। এই নিয়ম সবার জন্যই প্রযোজ্য, তাই তাঁরাও এর বাইরে নন।’

অস্ট্রেলিয়ায় এই ভাইরাসে ২২ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৯০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগামী মাস থেকে অস্ট্রেলিয়ায় টিকাদান শুরু হবে।

নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের প্রধান গ্ল্যাডিজ বেরেজিকলিয়ান ২ জিবি রেডিওকে বলেন, ‘টিকা দেওয়া ছাড়া কেউ বাইরে যেতে পারবে না বলে ইতিমধ্যে এয়ারলাইনগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে। আমি মনে করি, এটি বেশির ভাগ মানুষের জন্যই উৎসাহব্যঞ্জক হবে।’

দেশটিতে ফাইজার ও অক্সফোর্ডের টিকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।