অস্ট্রেলিয়ায় লকডাউনের বিরুদ্ধে রাস্তায় হাজারো মানুষ, আটক ৫৭

অস্ট্রেলিয়ায় জারি করা কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবিতে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
ছবি: এএফপি

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে অস্ট্রেলিয়া সরকারের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবিতে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। দেশটির সিডনি শহরে রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। মেলবোর্ন ও ব্রিসবেন শহরেও হয়েছে বিক্ষোভ। লকডাউনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাঁদের। এ সময় ৫৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। খবর বিবিসির।

অস্ট্রেলিয়ায় করোনার ডেলটা ধরন ছড়িয়ে পড়ায় বেড়ে যায় সংক্রমণের হার। এর জের ধরে জারি করা হয় কঠোর বিধিনিষেধ। দেশটিতে লকডাউনের আওতায় রয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। করোনার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ দেখছে সিডনি শহর। টানা চার সপ্তাহ লকডাউনে ঘরবন্দী হয়ে আছেন শহরটির বাসিন্দারা। এরপরও সেখানে বেড়েই চলেছে সংক্রমণ।

লকডাউনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আজ শনিবার সিডনি সেন্টারের দিকে যান শহরটির হাজার হাজার বাসিন্দা। এ সময় প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁদের স্লোগান দিতে দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘মাস্ক খুলুন, আপনার আওয়াজ তুলে ধরুন।’ আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘জেগে ওঠো অস্ট্রেলিয়া।’ একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে সিডনি টাউন হলের বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় অনেকেই ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের দিকে বোতল ছুড়ে মারেন।

সিডনির বাইরে মেলবোর্নেও ছোট ছোট বিক্ষোভ হয়েছে। শহরে পার্লামেন্টের বাইরে অনেককে অবস্থান করতে দেখা যায়। লকডাউনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে ব্রিসবেনের বোটানিক্যাল গার্ডেনসেও।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অধিকার আছে বলে জানিয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ। তবে করোনা রোধে সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ অমান্য করায় অনেককে আটক করা হয়েছে বলে জানায় তারা।

অস্ট্রেলিয়ায় করোনা সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশে। প্রদেশটিকে করোনার হটস্পট বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবারও নিউ সাউথ ওয়েলসে সর্বোচ্চ ১৬৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংকট মোকাবিলায় সেখানে অন্য প্রদেশগুলো থেকে টিকা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রাড হ্যাজার্ড। তিনি বলেন, নিউ সাউথ ওয়েলসে যদি করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়, তাহলে এটি সারা দেশের জন্য বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে।

উন্নত দেশগুলোর মধ্যে টিকাদানে বেশ পিছিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে করোনার টিকা পেয়েছেন ১৪ শতাংশের কম মানুষ। এর মধ্যেই বেড়ে চলেছে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া করোনা শনাক্তের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজার ৫৯৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ৯১৬ জনের।