আফগানিস্তান–বিষয়ক মার্কিন শীর্ষ দূতের পদত্যাগ

জালমে খলিলজাদ
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তান-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ পদত্যাগ করছেন। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এ তথ্য জানায়। খবর রয়টার্সের।

আগস্টের মাঝামাঝি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হয়। কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যায়। এক চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়। এ ঘটনার দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে খলিলজাদ তাঁর পদ ছাড়ছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, খলিলজাদের স্থলাভিষিক্ত হবেন তাঁর সহকারী টম ওয়েস্ট।

ব্লিঙ্কেন বলেন, আফগানিস্তানে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন ওয়েস্ট। কাবুলের মার্কিন দূতাবাস এখন কাতারের রাজধানী দোহা থেকে তার কার্যক্রম চালাচ্ছে।

ঘটনা সম্পর্কে অবগত—এমন একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খলিলজাদ গত শুক্রবার তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর সম্প্রতি তালেবান নেতাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের মুখোমুখি আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। দোহায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে খলিলজাদকে রাখা হয়নি। এর ধারাবাহিকতায় খলিলজাদ পদত্যাগপত্র জমা দিলেন।

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে খলিলজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

খলিলজাদের জন্ম আফগানিস্তানে। ২০১৮ সাল থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান-বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সমঝোতা হয়, তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন খলিলজাদ। পরবর্তী সময়ে তিনি আফগানিস্তানের তৎকালীন আশরাফ গনি সরকারের সঙ্গে তালেবানকে আলোচনায় বসাতেও ভূমিকা রাখেন।

গত ১৫ আগস্ট কাবুলের পতন ঘটে। কাবুল পতনের আগমুহূর্তে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আফগানিস্তান ছেড়ে পালান। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে পশ্চিমাসমর্থিত সরকারের পতন ঘটে।

কাবুলের পতনের পর খলিলজাদ আফগানিস্তানে থাকা মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তাকারী আফগানদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তালেবানের সহায়তা চেয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ভাষ্য, খলিলজাদ তিন বছর ধরে আফগানিস্তান-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করেন। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে যেভাবে বিদায় নিতে হয়েছে, তাকে দেশটির স্মরণকালের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়। আর এই ব্যর্থতার প্রধান মুখ হয়ে ওঠেন খলিলজাদ।