আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৪৭

পাকিস্তানের বিমান হামলায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় খোশত প্রদেশের শত শত মানুষ, ১৬ এপ্রিল,
ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় খোশত ও কুনার প্রদেশে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। স্থানীয় সময় গত শনিবার আফগানিস্তানে এই বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। খবর আল-জাজিরার।

খোশত প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক শাবির আহমাদ ওসমানী গতকাল রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘খোশত প্রদেশে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমানা বিভাজনকারী রেখা ডুরাল্ড লাইনের কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর বিমান হামলায় ৪১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। এ ছাড়া হামলায় আরও ২২ জন আহত হয়েছেন।’

খোশতে ৪১ জন নিহত হওয়ার এই তথ্য সেখানকার আরও দুই সরকারি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন। এদিকে এক আফগান কর্মকর্তা শনিবার বলেন, কুনার প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের প্রতিবেদনে শিশুদের মরদেহের ছবি প্রকাশ করে জানানা হয়েছে, এসব শিশু পাকিস্তানের বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছে।

টোলো নিউজের প্রতিবেদনে আরও দেখানো হয়েছে, খোশত প্রদেশের শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে পাকিস্তানের নিন্দা জানাচ্ছেন। ওই বিক্ষোভে পাকিস্তানবিরোধী স্লোগানও দেওয়া হয়।

এই বিমান হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে গতকাল রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে যেসব সশস্ত্র যোদ্ধা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে তালেবান কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

আল-জাজিরা বলছে, কঠোর ভাষায় দেওয়া পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অপতৎপরতা চালাচ্ছে।’

গত বছর তালেবান আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে। ইসলামাবাদ দাবি করে আসছে, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু তাদের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে তালেবান।

আরও পড়ুন

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিশ্বের সঙ্গে আফগান সরকারের যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটি করছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁর পূর্বসূরি ইমরান খানের মতো আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবানকে সাহায্য করবে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

আফগানিস্তান থেকে জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা করছে— ইসলামাবাদের এ দাবি তালেবান অস্বীকার করেছে। তবে আল-জাজিরা বলছে, অভিযোগ অস্বীকার করলেও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দুই দেশের সীমান্তে ২ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়া দেওয়ার ঘটনায় ইসলামাবাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছে তালেবান নেতৃত্ব।