আফগানিস্তানের সংকট মানবসৃষ্ট, যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় ইমরান

ইমরান খান
এএফপি ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে তীব্র মানবিক সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে আফগান অ্যাকাউন্ট জব্দ করার সমালোচনা করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন ইমরান।

সম্প্রতি পাকিস্তানে ৫৭টি মুসলিমপ্রধান দেশের জোট ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। আফগানিস্তান সংকট ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণে বিশেষ এক অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আফগানিস্তানে সহায়তার জন্য হিউম্যানিটারিয়ান ট্রাস্ট ফান্ড নামের একটি তহবিল গঠন করা হবে। খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচিও চালু করা হচ্ছে।

ডনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এ বৈঠকের সাফল্য উদ্‌যাপন করতে গতকাল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আফগানিস্তানে মানবিক সংকট তৈরির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, মানবসৃষ্ট এক সংকট তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে জব্দ করা আফগান হিসাব খুলে দেওয়া হলে এবং তাদের ব্যাংক ব্যবস্থায় তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখলে এ সংকট এড়ানো যেত। এটা জানার পরও তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ইমরান মনে করেন, আফগানিস্তানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করার কারণে দেশটির অর্থনৈতিক সংকট জোরালো হয়েছে। আর তাতে বেড়েছে মানবিক সংকট।

আগস্টে কাবুলে তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর আমেরিকান ব্যাংকগুলোতে থাকা প্রায় ৯৫০ কোটি ডলার মূল্যের আফগান রিজার্ভ জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে খরা ও সংঘাতের কারণে জর্জরিত আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের এসব নিষেধাজ্ঞা সংকটকে তীব্র করেছে। ওয়াশিংটন ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে, তালেবানশাসিত আফগানিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলেও জব্দ করা তহবিল ছাড়বে না তারা।

ইমরান খান বলেন, আফগানিস্তানের সংকট মোকাবিলার জন্য ‘অবিরাম সংগ্রাম’ চালিয়ে যেতে হবে। আফগানিস্তান ইস্যুতে পাকিস্তানের পূর্ববর্তী সরকারদের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনাও করেছেন তিনি। তিনি মনে করেন, আগে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা বিদেশি সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় স্বার্থ ও মর্যাদা প্রশ্নে আপস করেছেন। অতীতে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করা হয়নি। ডলার অর্জনের আশায় সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যোগ দিয়েছে পাকিস্তান। ইমরান বলেন, এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান নিজেই নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করেছে।