আলজেরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বুতেফ্লিকার পদত্যাগ

আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা। ছবি: বিবিসি
আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা। ছবি: বিবিসি

কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় গণমাধ্যমে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।

এর আগে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আবদেল আজিজ পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান।

গণমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট আবদেল আজিজ বুতেফ্লিকার পদত্যাগের ঘোষণা শোনার পর আনন্দ–উল্লাসে মেতে ওঠে আলজেরিয়ার মানুষ। রাজধানী আলজিয়ার্সের রাস্তাগুলোতে ক্রমাগত গাড়ির হর্ন শোনা যায়। জাতীয় পতাকা নেড়ে, গান গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে জনতা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালমৌয়ি সিদ্দিক নামের একজন বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় এবার আমরা শতভাগ গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হব। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পূর্ববর্তী শাসনের পুরোটাই অপসারণ করতে হবে। তবে তা কঠিন কাজ।’

জাতীয় সংবাদ সংস্থা এপিএসের এক বিবৃতিতে পদত্যাগের ঘোষণা আসে। সেখানে লেখা ছিল, প্রেসিডেন্ট বুতেফ্লিকা সাংবিধানিক পরিষদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ করার বিষয়টি জানান। সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সিনেটের স্পিকার দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

বিক্ষুব্ধ জনতা দেশটির রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দাবি করেছে। যে রাজনীতিতে সামরিক বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সে ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নেই জনতার। আন্দোলনকারীদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। তারা নতুন আঙ্গিকে সরকারব্যবস্থা গঠনের ওপর জোর দিয়েছে। আবদেল আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ‘লা পোভার’ নামক একটি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করেছেন।

১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএন) জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করে সংশোধন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আবদেল আজিজ ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ইসলামি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এক গৃহযুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ মানুষ নিহত হয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে ক্ষমতা পোক্ত হয় তাঁর।