ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে ঘটলটা কী!

গত বছরের অক্টোবরে স্যাটেলাইট চিত্রে ইরানের নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্র
ছবি: রয়টার্স

ইরানের নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে গতকাল রোববার একটি ‘অঘটন’ ঘটেছে। দেশটির শীর্ষ পরমাণু কর্মকর্তা এই ঘটনার জন্য ‘পরমাণু সন্ত্রাসবাদকে’ দায়ী করেছেন। নাতানজ কেন্দ্রে বৈদ্যুতিক বিতরণ গ্রিডের সমস্যা থেকে অঘটন ঘটেছে বলে জানান ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার মুখপাত্র। আর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ নাতানজ কেন্দ্রে সাইবার হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে গোয়েন্দা সূত্র। খবর রয়টার্সের।

ইরানের পরমাণুপ্রধান আলি আকবর সালেহি বলেছেন, এই ‘সন্ত্রাসী কাজের’ জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার তেহরান রাখে। তবে নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘সন্ত্রাসী কাজের’ জন্য তেহরান ঠিক কাকে দায়ী করছে, তা বলেননি সালেহি।

নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রটি রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে মধ্যাঞ্চলের ইসফাহান প্রদেশের মরুভূমিতে অবস্থিত। কেন্দ্রটি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত। জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থা আইএইএর পরিদর্শকেরা নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রটি তাঁদের নজরদারিতে রেখেছেন। গতকাল সকালে কেন্দ্রটিতে ‘বৈদ্যুতিক গোলযোগ’ দেখা দেয় বলে খবর বের হয়।

আবার ইসরায়েলি গণমাধ্যমে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে সাইবার হামলা চালিয়েছে। এই হামলার ফলেই সেখানে অঘটন ঘটেছে।

ঘটনার বিষয়ে ইসরায়েল সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েল সতর্কতা উচ্চারণ করছিল।

গতকাল ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার মুখপাত্র জানান, নাতানজ কেন্দ্রে বৈদ্যুতিক বিতরণ গ্রিডে সমস্যা হয়। এই সমস্যা থেকে একটা অঘটন ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কোনো দূষণও ছড়ায়নি।

ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। তাদের অভিযোগ, এই অস্ত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ইরান। তেহরান বলছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে।

নাতানজ কেন্দ্রে ঠিক কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে আইএইএর এক মুখপাত্র বলেন, তাঁরা গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের ব্যাপারে অবগত। তবে তাঁরা বর্তমান পর্যায়ে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ইরানের গণমাধ্যমে যে বিবরণ এসেছে, প্রকৃতপক্ষে নাতানজ কেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তার চেয়ে অনেক বেশি।

গত বছরের জুলাইয়ে একই পারমাণবিক কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। একে নাশকতা বলে বর্ণনা করেছিল ইরান।