উত্তেজনার মাঝে তাইওয়ান পেল যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ
ফাইল ছবি: রয়টার্স

তাইপে ও বেইজিংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ওয়াশিংটনের কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের অত্যাধুনিক সংস্করণ পেল তাইওয়ান। আজ বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের কাছ থেকে পাওয়া সামরিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। রয়টার্সের খবর।

এ অঞ্চলে ঘন ঘন চীনা ও মার্কিন সামরিক মহড়ার কারণে তাইওয়ানকে ঘিরে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র মনে করে। অন্যদিকে তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড মনে করে চীন। তাই তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় বেইজিং। চলমান উত্তেজনার জন্য বেইজিংকে দোষারোপ করে আসছে তাইওয়ান। অন্যদিকে তাইওয়ানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে চীন।

তাইওয়ানের চিয়াই শহরের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের অত্যাধুনিক সংস্করণ এফ-১৬ভির উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাই বলেন, তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্বের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে এ প্রকল্প।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাইওয়ানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক স্যান্ড্রা ওউডক্রিক।

অনুষ্ঠানে সাই আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যত দিন আমরা গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার বিষয়টি মেনে চলব, তত দিন সমমনা অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে এসে দাঁড়াবে। ’

তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের প্রধান আন্তর্জাতিক সমর্থনকারী এবং অস্ত্র সরবরাহকারী। এ কারণে বেইজিং বিক্ষুব্ধ।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন ও তাইওয়ানে অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের সঙ্গে ৩৯৬ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছে। দুই দেশের সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একে সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছে তাইপে।

তাইওয়ানের বিমানবাহিনী ভালো প্রশিক্ষিত, কিন্তু চীনের কাছে তা নগণ্য। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৮ বিলিয়ন ডলারে তাইওয়ানের কাছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রির বিষয়টি অনুমোদন দেয়। ইতিমধ্যে তাইওয়ানের কাছে ২০০টির বেশি জেট বিমান রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।

তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির জন্য চীন লকহিড মার্টিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের সামরিক সহযোগিতার কথা আগেই প্রকাশ করেছিলেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। তিনি আগেই বলেছিলেন, তাইওয়ানে অবস্থান করছে মার্কিন কিছু সেনা। তারা তাইওয়ানের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। চীন যদি তার দেশে আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে তার দেশের প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসবে যুক্তরাষ্ট্র। এই আস্থা তার আছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও তাইওয়ানের পাশে থাকার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। তিনি বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ করে, তাহলে তাইওয়ানকে রক্ষা করতে তাদের পক্ষ নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, তাইওয়ানের স্বাধীনতায় উৎসাহ দেওয়া ‘আগুন নিয়ে খেলা’র মতো। তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোর বিষয়ে সতর্ক করেন তিনি।