এবার হাজিদের জমজমের পানি বিতরণ করবে রোবট

এই রোবটই সরবরাহ করবে জমজমের পানি
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় চলতি সপ্তাহ থেকে জমজম কূপের পানি বিতরণ করছে রোবট। এ বছর হজকালে এই নগরীতে আসা হাজিদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই পানি বিতরণের প্রস্তুতি হিসেবে নেওয়া হয়েছে এ উদ্যোগ। খবর এএফপির।

বিশ্বে আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারির মধ্যে এবার পবিত্র হজ পালনে সমবেত হওয়া হাজিদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার দেশটির সরকার এক ঘোষণায় জানায়, সৌদি নাগরিক ও দেশটিতে বসবাসকারী বিদেশিদের মধ্য থেকে মোট ৬০ হাজার মুসল্লি এবার হজ পালন করতে পারবেন।

করোনাকালে কারও হাতের স্পর্শ ছাড়াই হাজিরা যাতে এই নিরাপদ পানি সংগ্রহ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করাই রোবট ব্যবহারের লক্ষ্য।

হজ পালনের সুযোগ পাওয়া ব্যক্তিদের এই সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় খুবই কম। করোনার আগে ২০১৯ সালে সারা বিশ্ব থেকে ২৫-৩০ লাখ মুসল্লি হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। এ বছরের হজ আগামী মাসের মাঝামাঝি অনুষ্ঠিত হবে।

কর্মকর্তারা আশা করছেন, ছোট আকারের সাদা রঙের রোবটের মাধ্যমে আগামী রোববার শুরু হবে জমজমের পানি বিতরণের প্রস্তুতিমূলক কাজ। বদর আল-লোকমানি নামের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনাকালে কারও হাতের স্পর্শ ছাড়াই হাজিরা যাতে এই নিরাপদ পানি সংগ্রহ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা এ উদ্যোগের লক্ষ্য। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ২০টি রোবটকে এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। হজ শুরু হলে প্রয়োজনমাফিক এ সংখ্যা বাড়ানো হবে।

প্রতিবছর জমজমের কূপ থেকে লাখ লাখ বোতল পানি সরবরাহ করা হয়। হজ ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভের একটি। তবে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে গত বছর থেকে খুব সীমিত পর্যায়ে হজ পালনের সুযোগ দিচ্ছে সৌদি আরব সরকার।

শনিবার সৌদি সরকারের ঘোষণায় বলা হয়, এ বছর যে ৬০ হাজার মুসল্লি হজ পালন করতে পারবেন, তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী কোনো অসুখ থাকা যাবে না। বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। উপযুক্ত ব্যক্তিদের করোনার টিকার পূর্ণ ডোজ নিতে হবে অথবা অন্তত ১৪ দিন আগে এক ডোজ নিতে হবে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা ব্যক্তি যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁরাও হজ পালনের সুযোগ পাবেন।

সৌদি স্বাস্থ্য ও হজ মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাজিদের সংখ্যা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাঁরা মুসলিম দেশগুলোর কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।

গত মাসে সৌদি আরবের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রাথমিকভাবে দেশটির কর্তৃপক্ষ এবার টিকা নেওয়া কিছুসংখ্যক বিদেশিকে হজ পালনের সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছিল। কিন্তু কে কোন টিকা নিয়েছেন, তা নিয়ে বিভ্রান্তি, টিকার কার্যকারিতা এবং করোনার নিত্যনতুন ধরন নিয়ে উদ্বেগের কারণে কর্মকর্তারা সেই চিন্তাভাবনা থেকে সরে যান।