কম্বোডিয়ায় রাজনীতিবিদদের দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা বাতিল

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাজনীতিবিদদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা নিষিদ্ধ করে সংবিধানে একটি সংশোধনী পাস করেছেন কম্বোডিয়ার আইনপ্রণেতারা। দেশটির বিরোধী দল বলছে, তাদের জনপ্রিয় নেতাকে লক্ষ্য করেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। যদিও ক্ষমতসীন সরকারের দাবি, দেশপ্রেম ও বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধ করতেই সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে।

আজ সোমবার দেশটির পার্লামেন্টের এক সংক্ষিপ্ত অধিবেশনে এ সংশোধনী পাস হয়। ক্ষমতাসীন দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির (সিপিপি) ১১১ সাংসদ এর পক্ষে ভোট দেন। গত ৬ অক্টোবর এক ফেসবুক পোস্টে আইন মন্ত্রণালয়কে সংবিধান সংশোধনের অনুরোধ জানান কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। ওই পোস্টে তিনি বলেন, জাতির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এবং বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে সংশোধন প্রয়োজন।

সংবিধান সংশোধনের পর হুন সেন বলেন, ‘এর মাধ্যমে যাঁরা শীর্ষ পদধারী, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী হতে চান, সেই পদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ব্যক্তিদের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।’

সংশোধনীতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, সিনেট সদস্য ও কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিলের সদস্য হতে হলে শুধু কম্বোডিয়ার নাগরিক হতে হবে।

সংবিধান সংশোধনের পর হুন সেনের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও ফ্রান্সের পাসপোর্টধারী স্যাম রাইনসি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয়তার নতুন আইনটি বিশেষ করে তাঁর জন্যই করা হয়েছে।

হুন সেনের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী কম্বোডিয়ার বিরোধী দলের নেতা স্যাম রাইনসি ২০১৫ সাল থেকে ফ্রান্সে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি উসকানি ও মানহানির মামলায় বিচার এড়াতে সেখানে স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তাঁর দলের বিশাল জয়ের পর এসব আইনি ঝামেলা বেড়েছে।

স্যাম রাইনসির স্বেচ্ছা নির্বাসন এবং তাঁর মিত্ররা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দলটি ভেঙে দেওয়া হয়। ওই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সিপিপি জিতেছিল।
কম্বোডিয়ার সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের নির্বাহী পরিচালক চাক সোফি বলেন, শীর্ষ রাজনীতিবিদদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা বাতিল খুব দ্রতগতিতে হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, শিগগিরই নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

কম্বোডিয়ার সমালোচিত নেতা খেমার রুজের ‘সাবেক ক্যাডার’ হুন সেন (৬৯) বর্তমান বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী শাসক। টানা ৩৬ বছরের শাসনামলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী দল ও অধিকারকর্মীদের জেলে পাঠানোসহ নানাভাবে দমন–পীড়নের অভিযোগ রয়েছে।