করোনাভাইরাসে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমার দাবি চীনের

চীনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৬৬৫ জন। ছবি: রয়টার্স
চীনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৬৬৫ জন। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা কমছে বলে দাবি করেছে চীন। এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগী কমার দাবি করল দেশটি। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

আজ চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটিতে ২ হাজার ৯ জন নতুনভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন আরও ১৪২ জন।

রোগ নির্ণয়ের প্রক্রিয়া বদলের পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে এখন তা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে কমছে।

চীনে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। মারা গেছেন ১ হাজার ৬৬৫ জন।

চীনের বাইরে ৩০টি দেশে ৫০০-এর বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ফ্রান্স, হংকং, ফিলিপাইন ও জাপানে চারজন মারা গেছেন।

আক্রান্ত মানুষের নতুন সংখ্যা প্রকাশের আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘নতুন আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, এই মহামারি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। আমরা এমনভাবে সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা নিয়েছি যে, অন্য কোনো দেশ তা করতে পারে বলে আমি দেখিনি।’

গতকাল শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসাস প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার বিষয়ে চীনের তৎপরতার প্রশংসা করেন।

ভাইরাসটি ছড়ানো বন্ধে সরকারের পদক্ষেপের কারণে চীনের কোটি কোটি মানুষ এখনো নানা বিধিনিষেধের মধ্যে তাদের দৈনন্দিন জীবন কাটাচ্ছে। সরকারের বেশির ভাগ পদক্ষেপ ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে। শহরটিকে দেশটির অন্যান্য শহর থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে অন্য সব শহরে চান্দ্রবর্ষের ছুটি কাটিয়ে বেইজিং ফেরা বাসিন্দাদের ১৪ দিনের জন্য নিজস্ব কোয়ারেন্টাইন (যে সময় পর্যন্ত সংক্রমণের আশঙ্কায় পৃথক রাখা হয়) বা সরকারি কেন্দ্রে কোয়ারেন্টাইনের জন্য চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ অমান্য করলে শাস্তি পেতে হবে বলেও জানানো হয়।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, হুবেই প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। পাশাপাশি অন্য প্রদেশগুলোতেও ১১ দিন ধরে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ হয়ে ওঠার হারও দ্রুত বাড়ছে।

তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হুবেইয়ের হাসপাতালগুলোয় রেসপিরেটরি মাস্ক, গগলস ও সুরক্ষা পোশাকের সংকট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। সেবা দিতে গিয়ে ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

গত ৭ জানুয়ারি চীনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ কাউন্সিল পলিটব্যুরো স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দেওয়া বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বৈঠকে তিনি করোনাভাইরাস ঠেকাতে অনির্ধারিত নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্যটি প্রকাশ করে চীন কর্তৃপক্ষ এই প্রথমবার অবহিত করল যে, প্রেসিডেন্ট করোনাভাইরাস নিয়ে প্রথমবার প্রকাশ্যে কথা বলার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকেই তিনি প্রাদুর্ভাবের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন।