কাতারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করতে নেতারা সৌদিতে

সৌদি বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল–থানি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

স্বাভাবিক হচ্ছে কাতার ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সম্পর্ক। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে কাতারের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার ও একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরে আজ মঙ্গলবার এই অঞ্চলের দেশগুলোর নেতারা সৌদি আরবে মিলিত হয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

এ উপলক্ষে সৌদি আরবের উত্তরাঞ্চলের ঐতিহাসিক আল-উলা শহরের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সেখানে আরবে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলনেই আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। সৌদি আরবের মিত্র দেশগুলোর নেতারা যেমন সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। তেমনি কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যে প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শুরু হয়েছে, এটা তারই সর্বশেষ পদক্ষেপ। মূলত ইরানের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে জোটবদ্ধ করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের।

এই সম্মেলনের এক দিন আগে গতকাল সোমবার সৌদি আরব ঘোষণা দেয়, তারা কাতারের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দিচ্ছে। এর মধ্যে আকাশ, নৌ ও স্থলবন্দরও রয়েছে।

এদিকে কাতারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা সৌদি আরব দিলেও অন্য দেশগুলো এখনো কিছু জানায়নি। তবে জ্যারেড কুশনার বলছেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা হলো, বাকি দেশগুলোও এমন পদক্ষেপ নেবে। এ ছাড়া যে চুক্তি হতে যাচ্ছে তার কারণ, কাতারও এই দেশগুলো বয়কট–সংক্রান্ত যেসব আইন পাশ করেছে তা বাতিল করবে।’

২০১৭ সালের পূর্বঘোষণা ছাড়াই কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর। ওই সময় তাদের অভিযোগ ছিল, কাতার সন্ত্রাসবাদের মদদ দিচ্ছে। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে দেশটির। কিন্তু কাতার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। এরপর নানান টানাপোড়েনের পর দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হতে যাচ্ছে। এমন সময়ে এই সমঝোতা হচ্ছে যখন ইরান ও এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এই চুক্তির পেছনে আরেকটি উদ্দেশ্য রয়েছে সৌদি আরবের। সেটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন, সৌদি আরবের মানবাধিকার ইস্যু ও ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের সম্পৃক্ততার কারণে তিনি কঠোর অবস্থান নেবেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন সৌদি আরব এই চুক্তি করে জো বাইডেনকে তারা এটা দেখাতে চায়, রিয়াদ আলোচনায় প্রস্তুত।