কারফিউ ভাঙা, সরকারি সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগে শ্রীলঙ্কায় গ্রেপ্তার ২৩০

মহিন্দা রাজাপক্ষের বাসার কাছে বিক্ষোভ
রয়টার্স ফাইল ছবি

শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় ২৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ৯ মে থেকে কারফিউ লঙ্ঘন, জনসাধারণের ওপর হামলা, সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগ রয়েছে। খবর ডেইলি মিরর শ্রীলঙ্কার।

পুলিশের মুখপাত্র এএসপি নিহাল থালদুওয়া জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৮ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৭১ জন পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের, ৪৩ জন দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশের, ১৭ জন মধ্য প্রদেশের, ৩৬ জন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের, ৪৭ জন উত্তর-মধ্য প্রদেশের, ১৩ জন সাবারাগামুওয়া ও ২ জন উভা প্রদেশের।

পুলিশ গতকাল রোববার কয়েকজনের ছবি প্রকাশ করেছে। পুলিশ তাঁদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে জনগণের সহায়তা চেয়েছে। পুলিশ বলছে, তাঁদের মধ্যে ৯ মে গালে ফেইস ও কোল্লুপিতিয়ায় নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলাকারীরাও রয়েছেন।

৯ মে বিক্ষোভকারীদের ওপর এ হামলার ঘটনায় সরকার পক্ষের ওপরও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে নয়জন নিহত হন। আহত হন তিন শতাধিক। ওই দিনই পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে।

পরদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় কলম্বোয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। এর আগে হাজারো বিক্ষোভকারী বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা রাজধানীর ‘টেম্পল ট্রিজ’ বাসভবনের মূল দোতলা ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।

ওই দিনের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলার ঘটনাটি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলম্বোর এক ম্যাজিস্ট্রেট।

নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর রাজাপক্ষে পরিবারের সমর্থকদের হামলায় উসকানি দেওয়ার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেন বিক্ষোভকারী ও দেশটির ধর্মীয় নেতারা। এর জেরেই মূলত পাল্টা হামলা শুরু হয়।

আরও পড়ুন

করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।

অচলাবস্থা নিরসনে জাতীয় সরকার গঠনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করেছেন। এরপর প্রবীণ রাজনৈতিক রনিল বিক্রমাসিংহে ষষ্ঠবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে মাহিন্দা রাজাপক্ষের ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ ছাড়া জাতীয় সরকারে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।